প্রকল্পে ৫ বছরে অগ্রগতি ৭.৫৪ শতাংশ, ব্যয় বাড়ছে ৪১৮২ কোটি টাকা
২২ আগস্ট ২০২৩ ১২:০৫
ঢাকা: জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পে পাঁচ বছরে অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৭.৫৪ শতাংশ। ‘ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ’ শীর্ষক প্রথম সংশোধিত প্রকল্পে দেখা গেছে এমন চিত্র। এ অবস্থায় এখন নতুন করে বাড়ছে ব্যয় ও মেয়াদ। এটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল এক হাজার ৮৬৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এখন ৪ হাজার ১৮২ কোটি ৬৭ লাখ ৩৮ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৬ হাজার ৫০ কোটি ৫৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা।
প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, আগামী ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লা মিয়ান। সেখানে প্রস্তাবিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ এবং দু’পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ প্রকল্পের সহায়ক হিসাবে ২৩৬.৭৪ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ৩০২.৭০ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তরের জন্য সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়।
এটির মোট ব্যয় এক হাজার ৮৬৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা ধরা হয়েছিল। ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়নের মেয়াদ ছিল। ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর এটি একনেকে অনুমোদিত হয়। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকল্পের মেয়াদ প্রথমবার ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এছাড়া পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পের দ্বিতীয়বার ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া চলতি বছরের ৩০ জুনে পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছিল।
বর্তমানে ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধি, সার্ভে ও ইউটিলিটি স্থানান্তর খাতে ব্যয় বৃদ্ধি এবং বাস্তবায়ন মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধিসহ মোট ৬ হাজার ৫০ কোটি ৫৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্পটি ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রথম সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। মূল অনুমোদিত ডিপিপির তুলনায় প্রস্তাবিত প্রথম সংশোধিত ডিপিপির প্রাক্কলিত ব্যয় ৪ হাজার ১৮২ কোটি ৬৭ লাখ ৩৮ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলেও মূল প্রকল্প এবং সংশোধিত প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একই রয়েছে। বরং মূল প্রকল্প যেখানে ২৩৬.৭৪ কিলোমিটার মহাসড়ক ভূমি অধিগ্রহণ করার উল্লেখ রয়েছে; আরডিপিপিতে (সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) তা ২৩২.৪৬ কিলোমিটার উল্লেখ রয়েছে। ফিজিবিলিটি স্টাডি অনুযায়ী মূল ডিপিপি করা হলেও সংশোধিত ডিপিপি’তে নতুন করে ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়েছে কিনা সেটিও সভায় জানতে চাওয়া হবে।
চলতি বছরের ২৩ থেকে ২৬ জুন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার চলমান কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এরমধ্যে এই প্রকল্পটিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
পাশাপাশি ইউটিলিটি স্থানান্তর খাতে ১৭৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। যৌথ সার্ভের ভিত্তিতে ইউটিলিটি স্থানান্তরের পরিমাণ নির্ধারণসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার চূড়ান্ত চাহিদার ভিত্তিতে ইউটিলিটি স্থানান্তরের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে সভায় প্রশ্ন তুলবে পরিকল্পনা কমিশন।
এছাড়া আরও অনেক প্রস্তাবই পরিকল্পনা কমিশনের সভায় প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে বলে জানা গেছে।
সারাবাংলা/জেজে/এমও