Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম বন্দরে ১১ মিটার গভীর জাহাজ ভেড়ানোর আশা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২২ আগস্ট ২০২৩ ১৮:০৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ২০২৪ সালের মধ্যে ১১ বা সাড়ে ১১ মিটার গভীরতার জাহাজ জেটিত ভেড়ানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে বন্দর ভবনে চেয়ারম্যানের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা জানিয়েছেন।

রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বাঙালি জাতির জন্য একটি সম্পদ। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের মোট বাণিজ্যের ৯২ শতাংশ এবং কনটেইনারজাত পণ্যের ৯৮ শতাংশ পরিবাহিত হয়ে থাকে। প্রতি বছর নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি করছে ২৫০ বছর পুরোনো এই বন্দর।’

‘বর্তমানে কন্টেইনার জাহাজ বহির্নোঙরে আসার এক থেকে দুই দিনের মধ্যে জেটিতে ভিড়ছে, ক্ষেত্রবিশেষে অন-অ্যারাইভেল বার্থিং প্রদান করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কনটেইনারহ্যান্ডলিং হয়েছে ৩০ লাখ ৭ হাজার ৩৪৪ টিইইউএস। জেনারেল কার্গো ওঠানামা হয়েছে ১১ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৩ মেট্রিক টন। জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ৪ হাজার ২৫৩টি।’

তিনি আরও বলেন, ‘১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো, ইউরোপের সঙ্গে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, বহির্নোঙরের আওতা বৃদ্ধি, ভিটিএমআইএস, ডিজিটালাইজেশন, কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের অত্যাধুনিক কি সাইড গ্যান্ট্রি ক্রেন সংযোজনের মতো উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে গত একযুগে।’

‘চট্টগ্রাম শহরের অনেক বর্জ্য কর্ণফুলী নদীতে পড়ে। এ কারণে নদীর গভীরতা দিন দিন কমছে। অনেক বর্জ্য আমরা সরিয়েছি। এটি প্রাকৃতিক চ্যানেল। আগামী বছরের মধ্যে ১১ মিটার বা সাড়ে ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বন্দর জেটিত ভেড়ানো সম্ভব হবে আশা করি। এর জন্য নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে দিন নেই, রাত নেই, কোনো হলিডে নেই। ২৪ ঘণ্টা সাত দিন সচল থাকে। আমাদের বন্দর সারাবিশ্বে সমাদৃত। বিভিন্ন দেশ ব্যাপক বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে। আগামী তিন বছরে ৫-৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে আশাকরি।’

‘একইসঙ্গে নতুন প্রযুক্তি আসবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেক দেশ আমাদেরকে অনুরোধ করে চট্টগ্রাম বন্দর যাতে তাদের সঙ্গে কাজ করে। বিশ্বের ১০০টি বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের স্থান এখন ৬৪তম।’

তিনি বলেন, ‘পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। জাহাজ ওখানে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অচিরেই এটাকে পূর্ণাঙ্গরূপে ব্যবহার করা হবে। আগামী মাসে অর্থাৎ ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বে টার্মিনালের মাস্টারপ্ল্যানের কাজ শেষ হবে।’

‘অক্টোবর মাস থেকেই বে টার্মিনালের গ্রাউন্ড ওয়ার্ক শেষ করতে পারবো বলে আশা রাখি। সরকারের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘ডিসেম্বরে বন্দরের নতুন কেমিক্যাল শেড চালু করা সম্ভব হবে। পিসিটি পরীক্ষামূলক চলছে। বে টার্মিনাল ও ব্রেক ওয়াটারের ডিজাইনের কাজ চলছে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রথম জেটি নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ১০-১২ হাজার কনটেইনার নিয়ে জাহাজ ভিড়তে পারবে। বড় জাহাজে পণ্য আনা হলে ভোক্তা পর্যায়ে সুবিধা পাবে।’

সরকারের নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্পের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমদানি করা পণ্য দ্রুততর খালাস ও রফতানিযোগ্য পণ্য দ্রুত জাহাজীকরণে ভবিষ্যৎ চাহিদাকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ স্বল্প এবং মধ্যমেয়াদী কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং সুবিধাদি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নতুন নতুন টার্মিনাল নির্মাণ করছে।’

বিজ্ঞাপন

‘ইতোমধ্যে ৫৮৪ মিটার দীর্ঘ জেটিসহ পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমান ও ভবিষ্যতে কন্টেইনার, কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিং নিরবচ্ছিন্ন রাখার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন হেভি লিফ্ট জেটি, বে-টার্মিনাল এবং কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় ‘মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক প্রকল্পসমূহের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এই প্রকল্পগুলোর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান সক্ষমতা বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে।’

সভায় বন্দরের সদস্য শহীদুল আলম, সচিব ওমর ফারুক এবং পরিচালক মমিনুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আইসি/এনএস

চট্টগ্রাম বন্দর

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর