বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন রেকর্ড: আয় বেড়ে আড়াই গুণ-মুনাফা দ্বিগুণ
২৩ আগস্ট ২০২৩ ০০:২৭
ঢাকা: আয় এবং মুনাফায় নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সদ্যগত ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির আয় ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। একই অর্থবছরে নিট মুনাফার পরিমাণ ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা। এর আগে আর কখনোই বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো অর্থবছরে এত বিপুল পরিমাণ আয় এবং মুনাফা করতে পারেনি।
এদিকে ঠিক আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের আয় ছিল ছয় হাজার ২৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকটির আয়ের পরিমাণ আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় দেড় গুণ বেড়ে আড়াই গুণ হয়েছে।
অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরে নিট মুনাফা ছিল পাঁচ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে পরের ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেবল মুনাফাই বেড়েছে চার হাজার ৯৭১ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৮৬ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ এই অর্থবছরে মুনাফার পরিমাণ আগের অর্থবছরের প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালন পর্ষদ এ হিসাব অনুমোদন দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারকে দেওয়া প্রায় এক লাখ কোটি টাকা ঋণ এবং বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে বিনিয়োগ থেকে আয় বাড়ার কারণেই এত বিপুল আয় ও মুনাফা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০২২-২৩ অর্থবছরের এসব আয় ও মুনাফার তথ্য সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট মুনাফা হয়েছে ১০ হাজার ৭৪৮ কোটির টাকা। এর মধ্যে ১০ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড ছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরে আয় হয়েছিল আট হাজার ৬০৮ কোটি টাকা, যা এখন এক অর্থবছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়ের স্থানে নেমে গেল। এর ঠিক আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আয় হয় সাত হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা, যা এখন ব্যাংকের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ আয়।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার ব্যাংক খাত থেকে মোট ঋণ নিয়েছিল এক লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক হিসাবের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেই সরকার ঋণ নেয় ৯৭ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। আর এই ঋণের সুদ বাবদ কেন্দ্রীয় ব্যাংক আয় করেছে সাত হাজার কোটি টাকা। এটিই গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বোচ্চ আয়ের খাত।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এর বাইরে ডলার বিক্রি তথা রিজার্ভ থেকে বিদেশি মুদ্রা বিনিয়োগ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক আয় করেছে ছয় হাজার কোটি টাকা। আর অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংককে দেওয়া ঋণের সুদ হিসেবে আয় হয়েছে দুই হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে সরকারকে দেয়া ঋণ আর রিজার্ভই ব্যাংকটির আয়ের মূল খাত।
মঙ্গলবারের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, অর্থপাচার প্রতিরোধে আমদানিতে বৈশ্বিকভাবে পণ্যের প্রকৃত মূল্য জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকে ব্লুমবার্গের একটি টার্মিনাল স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া রিজার্ভ থেকে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে দেওয়া অর্থের সুদহার লাইবর রেটের বদলে বাংলাদেশ ব্যাংক র্নিধারিত ‘বেঞ্চমার্ক পদ্ধতি’ অনুসরণ করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকর আয় বাংলাদেশ ব্যাংকর মুনাফা