বিএনপি মিথ্যা বলে জাতিকে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে চায়: পাপ্পা গাজী
২৩ আগস্ট ২০২৩ ০০:৩১
নারায়ণগঞ্জ থেকে: দেশের উন্নয়ন হলেও বিএনপি সে উন্নয়নকে সবসময় আড়াল করে রাখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা।
তিনি বলেন, সূর্য প্রতিদিন সকালে ওঠে। কিন্তু বিএনপির নেতারা প্রতিদিন জাতিকে বোঝাতে চায় যে এখনো সূর্য ওঠে নাই। তাই সবাই ঘুমাও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন সব খাতে এগিয়ে যাচ্ছে, তখনো তারা মিথ্যা অপপ্রচার করেই যাচ্ছে। কারণ তারা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে রুখে দিতে চায়।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত এক কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে দোয়া, মিলাদ ও রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ। এ দিন ছাত্রলীগের ১০০ নেতাকর্মী রক্তদান করেন। ব্যবস্থাপনায় ছিল কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হামলাকারীরা এক ও অভিন্ন বলে মন্তব্য করেন পাপ্পা গাজী। বলেন, তাদের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ধারায় ফিরিয়ে নেওয়া। এখনো বিএনপি সেই কাজই করে যাচ্ছে। এই বিএনপি-জামায়াতসহ যারা খন্দকার মোশতাকের মতো এখনো দেশের অগ্রযাত্রা নিয়ে অপপ্রচার চালায়, তাদের রুখে দিতে হবে। এজন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে ছাত্রসমাজকে, যার নেতৃত্ব দিতে হবে ছাত্রলীগকে। আমি আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব।
গাজী গোলাম মর্তুজা আরও বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের কীভাবে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে, তা আপনাদের বলেছি। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের জিয়াউর রহমান কীভাবে পুনর্বাসিত করেছে, তাও বলেছি। ২০০১ সালে তারেক রহমান একই কাজ করেন। হাওয়া ভবন তৈরি করে একের পর এক দুর্নীতি করে গেছেন। ভারতের পলাতক আসামি দাউদ ইব্রাহীমের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন এই তারেক রহমান।
পাপ্পা গাজী বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় ব্যবহার হয়েছিল আর্জেস গ্রেনেড, যা এর আগে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের সময় পাওয়া যায়। তারেক রহমান তার মায়ের নির্দেশনা ছাড়া এমন হামলার পরিকল্পনা করেছেন, এমন ভাববার কোনো উপায় নাই। এই যে ২১ আগস্ট হামলার বিচার হলো, তা নিয়ে কিন্তু তারা বেশি কথা বলে না। যেখানে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র চর্চা করে, বিএনপি সেখানে গ্রেনেড হামলা করে। এটাই বিএনপির চরিত্র। আর সেই বিএনপি এখন বলে মানবাধিকারের কথা।
বক্তব্যে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরেন গাজী গোলাম মর্তুজা। তিনি বলেন, যে মানুষ মেট্রোরেলে বসে বলে শেখ হাসিনার সরকার দরকার নাই, তার কি আদৌ মোবাইল দরকার আছে? এই বিএনপি কিন্তু ১৯৯৪ সালে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও বন্ধ করে দিয়েছিল। অথচ আজ তারেক জিয়া জুম আর গুগল মিটে বসে নিজেই ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা ভোগ করেন। ইন্টারনেট বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ পেয়েও তা না নেওয়ার একমাত্র কারণ হলো তাদের মুখোশ খুলে যাওয়ার ভয়।
পাপ্পা গাজী আরও বলেন, খালেদা জিয়া একসময় বলেছিলেন, বিদেশে তাদের বন্ধু আছে, কোনো প্রভু নাই। কিন্তু এখন কেন তার ছেলে গিয়ে লন্ডনে বসে আছে? কেন তারা আমেরিকার কাছে গিয়ে লবিং করে? সেই কথাগুলোর কোনো উত্তর তাদের কাছে নাই। কারণ তাদের কোনো সততা নাই। তাদের বিবেক নাই। তারা শুধু জানে কীভাবে অপপ্রচার করতে হয়। তারা জানে কীভাবে মিথ্যা বলে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে পিছিয়ে দেওয়া যায়।
বিএনপির অপপ্রয়াসকে রুখে দিতে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান গাজী গোলাম মর্তুজা। বলেন, সচেতনভাবে গুজব মোকাবিলা করতে হবে। আর এজন্য ছাত্রলীগের তরুণদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সবাইকে সচেতনভাবে অনলাইন ও অফলাইনে উন্নয়নের প্রচারের পাশাপাশি গুজব ও অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে। আর এজন্য আমি ছাত্রসমাজের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব।
রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ ভূঁইয়া মাসুমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন তারাবো পৌরসভার কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম মনির, রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তানজিম আহমেদ খাঁন রিয়াজসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর