Monday 30 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করিডোর কাজে লাগালে ২০৫০ সালে কর্মসংস্থান হবে ৭ কোটির বেশি: এডিবি

স্টাফ করেসপেন্ডেন্ট
২৩ আগস্ট ২০২৩ ১২:১৭

ঢাকা: অর্থনৈতিক করিডোরের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। এই সুবিধা কাজে লাগানো গেলে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ৭ কোটি ১৮ লাখ কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া ২০৪০ সালের মধ্যে হবে ৪ কোটি ৬২ লাখ কর্মসংস্থান এবং ২০২৫ সালের মধ্যে হবে ১ কোটি ২৭ লাখ।

পাশাপাশি এই সুবিধা কাজে লাগান গেলে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বাণিজ্য সুবিধা বাড়বে ২৮৬ বিলিয়ন ডলার। যা টাকার অঙ্কে ৩১ লাখ ৪৬ হাজার। ‘বাংলাদেশ ইকোনমিক করিডোর ডেভেলপমেন্ট হাইলাইটস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে এশীয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এটি প্রকাশ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজার রহমান ও বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনের (বেজা) চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন সুন চ্যাং হোং। আলোচক ছিলেন এডিবির ডিরেক্টর সব্যসাচী মিত্র, প্রাণ আরএফএল-এর ডিরেক্টর উজমা চৌধুরী এবং পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ। সমাপনী বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক করিডোরের তিনটি পরিপূরক উপাদান রয়েছে। এর একটি বাণিজ্য ও পরিবহন করিডোর উৎপাদন ক্লাস্টার যা অভ্যন্তরীণ বাজারে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য উভয়ই ব্যবহারের জন্য পণ্য উৎপাদন করে। এছাড়া শহুরে কেন্দ্রগুলো উৎপাদন কেন্দ্র থেকে পণ্যের প্রধান বাজার হিসেবে কাজ করে এবং আন্তর্জাতিক গেটওয়ের মাধ্যমে আমদানি করা পণ্যের জন্য তারা শ্রম প্রযুক্তি, সহায়তা পরিষেবা, জ্ঞান এবং উদ্ভাবনের উৎস হিসেবেও কাজ করে। এই তিনটি উপাদান একটি সাধারণ উন্নয়ন ব্লুপ্রিন্টে যুক্ত করা হয়, যা উপযুক্ত নীতি সমর্থন এবং সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে সম্ভব।

বিজ্ঞাপন

অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হলো স্বল্পোন্নত অঞ্চলের একীকরণের মাধ্যমে সমৃদ্ধি এবং অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি।

বর্তমানে উত্তর- পূর্ব এবং দক্ষিণ- পশ্চিম এলাকা দেশের প্রধান পিছিয়ে থাকা অঞ্চল। তাই বাংলাদেশের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ জুড়ে অভিন্ন, সামগ্রিক এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য ইকোনমিক করিডোরকে (বিইসি) দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল (খুলনা বিভাগ) থেকে উত্তর- পূর্ব অঞ্চলে (সিলেট) পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার ধারণা দেওয়া হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক করিডোরটি ১৪টি জেলাকে জুড়ে মোট জনসংখ্যার ৩৪ শতাংশ কভার করে। বেশিরভাগ উত্তর- পূর্ব জেলাগুলো ছয়টি হটস্পটের একটিতে অন্তর্ভুক্ত।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি করিডোর সুবিধা ব্যবহার করা না যায় তাহলে ২০৫০ সালে কর্মসংস্থান হবে ৩ কোটি ১১ লাখ। আর এই সুবিধা ব্যবহার করা গেলে হবে ৭ কোটি ১৮ লাখ কমংস্থান। এছাড়া ২০২৫ সালে সুবিধা ব্যবহার করা না গেলে হবে ১ কোটি ৩৪ লাখ, ব্যবহার করা গেলে ১ কোটি ৫৭ লাখ। ২০৩০ সালে সুবিধা ব্যবহার করা না গেলে ১ কোটি ৭০ লাখ, আর ব্যবহার করা গেলে হবে ২ কোটি ৩৪ লাখ। ২০৩৫ সালে সুবিধা কাজে না লাগানো গেলে ২ কোটি ১০ লাখ, সুবিধা কাজে লাগালে হবে ৩ কোটি ৪৭ লাখ কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া ২০৪০ সালে কর্মসংস্থান হবে ২ কোটি ৪৮ লাখ, তবে করিডোর সুবিধা কাজে লাগানো গেলে হবে ৪ কোটি ৬২ লাখ কর্মসংস্থান।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এই করিডোরগুলো সারাদেশের উন্নয়নকে একীভূত করবে। এখানে যেমন অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে একইসঙ্গে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ হবে। তবে এজন্য অবকাঠামো উন্নয়নের সঙ্গে দরকার নীতিনির্ধারণী সাপোর্টও। আমরা উন্নয়নে আগ্রহী। তবে এই উন্নয়নে কিছু রাজনৈতিক সামাজিক বাধা রয়েছে। এই বাধাগুলোকে কাটিয়ে উঠতে হবে।

তিনি বলেন, এই করিডোরগুলো সারাদেশের যুক্ত হওয়ার পেছনে বড় বাধা হবে ঢাকা। এজন্য বাইপাস সড়ক করতে হবে। না হলে ইকোনমিক করিডোর ব্যবহারের সুযোগ বাধাগ্রস্ত হবে। আমাদের চারিদিকে খুলে কাজ করতে হবে। বাধাগুলো দূর করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি দেশের সঙ্গে প্রতিটি দেশের ইনফরমাল বর্ডার ট্রেড রয়েছে। আমরা ইনফরমাল বর্ডার ট্রেড করতে চাই না। আমরা আরও উদার হতে চাই। বাংলাদেশ সবার সঙ্গে উদার ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চায়। তবে এর জন্য প্রয়োজন সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, যেন শ্রমিকরা শান্তিতে কাজ করতে পারে। তাহলেই দেশের উন্নয়ন হবে।

সারাবাংলা/জেজে/আইই

টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর