Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খুলনা সিটি নির্বাচন: কী ভাবছেন ভোটাররা


১৩ মে ২০১৮ ২২:১৮

।। মেসবাহ শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

খুলনা থেকে: মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনি প্রচারণা। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় তাই উৎসবমুখর শিল্প নগরী। মিছিলে মিছিলে সরগরম নগরীতে এখন চলছে প্রার্থীদের একে অন্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা।

এদিকে, প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করলেও ভোটাররা সহজে মুখ খুলছেন না। কেউ কেউ বলছেন, ভোট দেওয়ার মতো যোগ্য ও পছন্দের প্রার্থী নেই বললেই চলে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে অনেকেই অংশ নিচ্ছেন কোনো প্রার্থীর প্রচারণায়, কিন্তু সেই প্রার্থী সম্পর্কেই তাদের কিছুই জানা নেই। অনেকেই আবার এক প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নামলেও ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন জানাচ্ছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে।

নগরীর আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল মোড়ে টং দোকানে টুপি-তসবিহসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বিক্রি করেন ১১নং ওয়ার্ডের আউয়াল মিয়া। সারাবাংলার সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, ‘কাকে ভোট দেবো? ক্লিন ইমেজের কাউকেই তো দেখি না। তাই কেন্দ্রে যাব, কিন্তু ভোট দেবো না।’

সেখানেই কথা হয় ১১নং ওয়ার্ডের রিয়াদ হোসেনের সঙ্গে। খুলনা বিএল কলেজে ডিগ্রি অধ্যয়নের পাশাপাশি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি। মেয়র পদে জয়ের পাল্লা কার দিকে— এমন প্রশ্নের জবাবে রিয়াদের উত্তর, ‘দেশে দল তো একটাই— আওয়ামী লীগ। নেতাও একজন— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যা বলেন, করে দেখান। কিন্তু কিছু সমস্যা তো আছেই। শুধু উন্নয়ন দেখে এখন হয়তো সবাই ভোট দেবে না।’

নির্বাচন শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠু হবে কিনা— তা নিয়েও শঙ্কার কথা জানিয়েছেন কেউ কেউ। ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কার কথাও বলছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

নতুন রাস্তা মোড় থেকে পাবলা সাহাপাড়া ৬নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের নির্বাচনি প্রচারে দেখা গেল একদল নারী-পুরুষকে। মোড় পার হয়ে ছোট গলিতে ঢুকতে ঢুকতে কথা হয় দু’জন কর্মীর সঙ্গে। জানা গেল, আজই তারা প্রথম প্রচারণায় নেমেছেন। তবে প্রার্থী সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না তারা।

শহরের মুজগুন্নী, শিববাড়ী মোড়, ডাক বাংলা মোড়, প্রেসক্লাব এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার ভোটাররা বলছেন, মেয়র পদের প্রচারণায় অন্য সব প্রার্থীর তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীই। বিএনপি প্রার্থীকে এই নির্বাচনে খানিকটা কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে বলেও মনে করেন তারা।

প্রেসক্লাব এলাকার একজন ভোটার বললেন, নৌকার ১০টি মাইক চোখে পড়লে ধানের শীষের মাইক দেখবেন একটি। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেও তার এমন কথার প্রমাণ পাওয়া গেল। এখানে-সেখানে নৌকার পোস্টার-ব্যানারের ছড়াছড়ি থাকলেও ধানের শীষের পোস্টার-ব্যানার খুবই কম। আবার নৌকার পক্ষে স্থানে স্থানে দলবেঁধে প্রচারণা দেখা গেলেও ধানের শীষের পক্ষে তেমন দলও চোখে পড়ে না।

বিএনপির পক্ষ থেকে আগে থেকেই অভিযোগ করা হচ্ছে, নেতাকর্মীদের প্রচারণায় আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু রোববারও সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমাদের কর্মীরা যেন মাঠে না থাকে, সে জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, কেন্দ্র নিয়ে আওয়ামী লীগে পরিকল্পনার কথা এরই মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে প্রতিটি ওয়ার্ডে। ভোটের দিন প্রতিটি কেন্দ্রই নেতাকর্মী-সমর্থকদের দখলে রাখার নির্দেশনা রয়েছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে। ৬নং ওয়ার্ডের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব শেখ আব্দুস সালাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্র বিএল কলেজ। আমাদের প্রতিটি কর্মী ভোটের দিন কেন্দ্রে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় থাকবে। বিজয়ের প্রশ্নে কোনো ছাড় নয়।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে, শেষ সময়ে এসে নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মিছিলগুলোও চোখে পড়ছে। সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের প্রার্থীদের সমর্থকরাও বের হচ্ছেন মিছিল নিয়ে। সব মিছিলেই চোখে পড়ছে নারীদের ব্যাপক উপস্থিতি। কোনো কোনো প্রার্থী কেবল নারীদের নিয়েই মিছিল নামিয়েছেন মাঠে।

এদিকে, নির্বাচনকে সামনে রেখে নগরীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক রয়েছে। নগরীতে পুলিশের পরিস্থিতির পাশাপাশি টহল দিচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মোড়ে মোড়ে বিজিবির টহলে স্বস্তি পাচ্ছেন ভোটাররাও।

সারাবাংলা/এমএস/টিআর

কেসিসি নির্বাচন খুলনা খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর