বাংলাদেশ-সৌদি আরব বিমান চলাচলে সমঝোতা স্মারক সই
২৩ আগস্ট ২০২৩ ১৯:২৩
ঢাকা: বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিমান চলাচল সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং সৌদি আরবের পক্ষে সৌদি জেনারেল অথরিটি অব সিভিল এভিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আব্দুল আজিজ আল দুয়াইলেজ এতে সই করেন।
বুধবার (২৩ আগস্ট ) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়।
জানা যায়, এ সময় সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী ড. তৌফিক বিন ফাজওয়ান আল রাবিয়াহ, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসেফ ঈসা আল দুলাইহান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমানসহ দুই দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই সমঝোতা স্মারক সই হওয়ায় সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে বাংলাদেশের মনোনীত বিমান সংস্থা দেশের যেকোনো পয়েন্ট হতে সৌদি আরবের যেকোনো আন্তর্জাতিক পয়েন্টে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে। ২০১২ সালের সম্পাদিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশি বিমান সংস্থা সৌদি আরবের শুধু জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম ও মদিনা বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা করার সুযোগ পাচ্ছে।
নতুন সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বাংলাদেশ হতে সৌদি আরবে পরিচালিত ফ্লাইটের ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে নির্ধারিত ৪৯টি যাত্রী ও কার্গো ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সির পরিবর্তে ৪৯টি যাত্রী ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সি এবং নতুন করে ২১টি কার্গো ফ্লাইটের ফ্রিকোয়েন্সি সুবিধা পাবে বাংলাদেশের বিমান সংস্থাগুলো। ২১টি কার্গো ফ্রিকোয়েন্সির ক্ষেত্রে ফিফথ ফ্রিডম ট্রাফিক রাইটসের আওতায় চারটি মধ্যবর্তী অথবা দূরবর্তী পয়েন্ট ব্যবহার করে ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে। এ চারটি পয়েন্ট পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় দেশের এভিয়েশন শিল্প বিকশিত হয়ে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হচ্ছে। গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে সারাদেশে বিমান পরিবহন অবকাঠামোর যুগোপযোগী উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, যাত্রীসেবা বৃদ্ধি, কারিগরি ও জন দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের এভিয়েশন খাত উন্নত হয়েছে। বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে অন্যতম এভিয়েশন হাবে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছে। বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের ফলে দুই দেশের এভিয়েশন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও বৃদ্ধি পাবে। এটি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সহযোগিতার সকল ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের পর্যটনের পরিকল্পিত উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন সম্পন্ন হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই সম্ভাবনা কে কাজে লাগাতে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে দুই দেশের সহযোগিতার অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে সৌদি আরব বাংলাদেশের পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করলে স্বাগত জানাব।’
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী ড. তৌফিক বিন ফাজওয়ান আল রাবিয়াহ বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের বন্ধুত্ব অত্যন্ত দৃঢ়। সৌদি আরবে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশির বসবাস। যারা দুই দেশের উন্নয়নেই ভূমিকা রাখছেন। নতুন সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বিমান চলাচলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই দেশই এর সুফল পাবে।’
সৌদি আরবের মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আন্তরিক আতিথেয়তা এবং চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে বাংলাদেশের পর্যটনের বিকশিত হওয়ার বড় সুযোগ রয়েছে। যেকোনো পর্যটক বাংলাদেশের আতিথেয়তাকে আজীবন মনে রাখবে। সৌদি আরব ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পর্যটনের উন্নয়নে সহায়তা করবে।’
সারাবাংলা/এসজে/এনএস