Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাসিনা-জিনপিং বৈঠক: চীন বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে

সারাবাংলা ডেস্ক
২৪ আগস্ট ২০২৩ ১৩:৩৯

জোহানসবার্গে শি জিনপিংযের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিএমও

ঢাকা: জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় চীন বাংলাদেশকে সমর্থন করে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেছেন, চীন কোনো ধরনের বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে, যেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারে।

চীনের গণমাধ্যম সিনহুয়া জানিয়েছে, বুধবার (২৩ আগস্ট) দক্ষিণ আফিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জিনপিং এসব কথা বলেন। হোটেল হিলটন সেন্ডটনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জিনপিং উচ্চ মানের বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা জোরদার এবং বাংলাদেশ-চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে পূর্ণ রূপ দেওয়ার আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট দুই দেশকে অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, নতুন ধরনের জ্বালানি ও কৃষিসহ অন্যান্য খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারে এগিয়ে আসার কথা বলেন। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে জিনপিং বলেন, ২০১৬ সালে দুই দেশের সম্পর্ক কৌশলগত সহায়তামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত হয়। এটি দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীরতার দিকে ধাবিত হওয়ার প্রতিই ইঙ্গিত করে।

সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ ও চীন নিজস্ব উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনের একটু গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে অবস্থান করছে। চীন উন্নয়ন কৌশলে বাংলাদেশের পাশে থাকতে চায়। পাশাপাশি দুই দেশের জনগণের কল্যাণে বিভিন্ন খাতে প্রায়োগিক সহযোগিতা আরও জোরদার করতে চায়।

বিজ্ঞাপন

দুই দেশের মৌলিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে জোর সমর্থনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে চীন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে চায় বলে বৈঠকে উল্লেখ করে চীনা প্রেসিডেন্ট জিনপিং। তিনি বলেন, বিভিন্ন বিভাগে বিভিন্ন পর্যায়ে দুই দেশের কৌশলগত যোগাযোগ ও বিনিময় আরও নিবিড় করা উচিত। দুই দেশের মধ্যে জনবল বিনিময়ের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বন্ধন দৃঢ় করা আহ্বানও জানান জিনপিং।

নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে বাংলাদেশ যোগ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান চীনা প্রেসিডেন্ট। এ সময় ২০১৬ সালে জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরে দুই দেশের সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হওয়ার বিষয়টিকে মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেন শেখ হাসিনা। কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও উন্নয়নের অভিযাত্রায় পাশে থাকার জন্য তিনি চীনে প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের সমর্থন বাংলাদেশের উন্নয়ন ও জনগণের জীবনমান উন্নীত করার ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং একে অন্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার মতো বিষয়গুলো বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। তিনি বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের ১০ বছর পূর্তিতে জিনপিংকে অভিনন্দন জানান। বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড সহায়তা বাংলাদেশের উন্নয়নে নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে।

আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার এবং ব্রিকসের মতো বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে সহায়তা জোরদার করতে চায়। কারণ ব্রিকসের মতো কৌশলগুলো আরও উন্নত হলে তা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উন্নয়নের নতুন সুযোগ তৈরি করবে বলে বিশ্বাস করা হয়।

ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে গঠিত অর্থনেতিক জোট ব্রিকস। এর বর্তমান সভাপতি ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার আমন্ত্রণে ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ৩৫ মিনিট) জোহানসবার্গ পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সফরে আজ বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী ব্রিকস-ফ্রেন্ডস অব ব্রিকস লিডার্স ডায়লগ (ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ অ্যান্ড দ্য ব্রিকস প্লাস ডায়গল)-এ ‘নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব ব্রিকসে’র সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বক্তৃতা দেবেন। ব্রিকস সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করার কথা রয়েছে।

সারাবাংলা/টিআর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর