’৭৫-এর ষড়যন্ত্রকারী শনাক্তে কমিশন গঠনে আইন প্রস্তুত
২৪ আগস্ট ২০২৩ ১৭:৫৪
ঢাকা: আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্র এবং বঙ্গবন্ধুকে চিরতরে বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। ’৭৫-এর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের শনাক্তে ক্ষমতাসম্পন্ন উচ্চপর্যায়ের কমিশন গঠনের আইন প্রস্তুত। এটি জনগণের কাছে দলিল হিসেবে রেখে যাব।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘আগস্ট ট্র্যাজেডি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি‘ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দেওয়ার জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে জয়ী করার মধ্য দিয়েই তা সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে জয়লাভ করাতে না পারলে, বিএনপি-জামায়াত মিলে এই দেশকে বিরান করে ফেলবে। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আমরা বাংলাদেশ চাই। বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসের রাজনীতি চাই না। সময় এসেছে, তাদের সকল ষড়যন্ত্রের জবাব দেওয়ার।’
আনিসুল হক আরও বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরের নৃসংশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের বিচারতো দূরের কথা পুরস্কার হিসেবে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি রাজাকার, আল-বদরদের নিয়ে সরকার গঠন করেছিলেন। শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন।’
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ও ষড়যন্ত্রকারীদের পরিচয় প্রকাশে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠন করা হবে বলেও এ সময় জানান তিনি। এ নিয়ে আনিসুল হক বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করতে পারে, ‘নতুন প্রজন্ম ভাবতে পারে, আমরা কি প্রতিহিংসার জন্য এটা করছি? না, আমরা প্রতিহিংসার জন্য করছি না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এই কলঙ্কময় অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি প্রয়োজন। বাংলাদেশকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য, বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এবং বাংলাদেশকে যেন কেউ আবার আঘাত করতে না পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য সেই পরিচয়গুলো বাংলাদেশের নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জানা প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী দু’জন দক্ষিণ এশিয়ার। তাদের কেউই নিজ দেশ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন না। আন্তর্জাতিক আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জেলহত্যা মামলা ও ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সঙ্গে আপসকামিতার ঘৃণ্য চক্রান্ত আজও দৃশ্যমান।
নো মাইনরিটি দর্শন নিয়ে পথচলা সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহবায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষণ মেজর জেনারেল মোহম্মদ আলী সিকদার (অব.), সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. উত্তম বড়ুয়া, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আফিজুর রহমান ও জাতীয় গ্রন্থাগারের পরিচালক মিনার মনসুর।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম