ঢাকা: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী হলে দেশ মৌলবাদী, সন্ত্রাসী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের হাত থেকে রক্ষা পাবে। স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হটাতে চেষ্টা করছেন। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা যদি না থাকে তাহলে কেউ থাকতে পারব না।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে সরকার গঠনে মুক্তিযুদ্ধের ধারা অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয়ে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ সুরক্ষায় নতুন প্রজন্মের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা ও জেলা কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভা ও জেলা কনভেনশন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধীরা আবার সংগঠিত হচ্ছে। দেশি-বিদেশি চক্ররাও সংগঠিত হচ্ছে। যেসব বিদেশিরা মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সমর্থন করে নাই, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’
মুক্তিযুদ্ধ সন্তান কমান্ডের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৭১ সালে অস্ত্রের যুদ্ধ করেছি, এখন রাজনৈতিক যুদ্ধ করতে হবে। আর এই যুদ্ধে যদি সফল না হন, তাহলে মুক্তিযুদ্ধ সন্তান কমান্ড কোনো দাবি আদায় তো দূরের কথা, কিছুই পাবেন না। রাজনৈতিক যুদ্ধ করতে হলে মুক্তিযুদ্ধ সন্তান কমান্ডের সদস্যদের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। সমস্ত জেলায় আরও বড় করে এ ধরনের প্রোগ্রাম করতে হবে।’
পাটমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১৯৭৪ সালের রেসকোর্স ময়দানে মুক্তিযুদ্ধ সংসদের যে সম্মেলন করেছিলাম— সেখানে মুক্তিযোদ্ধাসহ তিন থেকে চার লাখ লোক হয়েছিল। সেই ধরনের একটি শক্তিশালী সম্মেলন রেসকোর্স ময়দানে আপনাদের আবার করতে হবে। এমন শক্তি প্রদর্শন ছাড়া রাজনৈতিক অধিকার আদায় করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালে ৬ দফা দিয়ে সারাবাংলার মানুষকে একত্রিত করেছিলেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা গিয়েছিলাম। এরপর ক্ষমতা না পেয়ে আবার বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। তারপর মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে ঘরে ফিরছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হটাতে চেষ্টা করছে। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা যদি না থাকে তাহলে আপনারাও নাই হয়ে যাবেন, আমরাও। কেউ থাকতে পারবো না। তাই শেখ হাসিনাকে আবার আগামী নির্বাচনে জয়ী করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিদের সংগঠিত হয়ে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শন করে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলেই শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী হলে আপনাদের দাবিগুলো পূরণ হবে বলে বিশ্বাস করি।’
‘যেভাবে বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতা যুদ্ধে গিয়েছিলাম, আজকে আমাদের ছেলে-মেয়েদেরও সেভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে সমর্থন দিতে হবে। তাকে (শেখ হাসিনা) যদি আবার প্রধানমন্ত্রী করে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে এই দেশ মৌলবাদী, সন্ত্রাসী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের হাত থেকে রক্ষা পাবে’— বলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী।
পাটমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশি ও আন্তর্জাতিক সব ষড়যন্ত্র আর নানা প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। দেশ উন্নত ও সমৃদ্ধি পথে এগিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করি।’
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম রেজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সংবিধান প্রণেতাদের অন্যতম ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী সিকদার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহমেদ এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল প্রমুখ।