‘জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে আর ক্ষমতায় থাকা যাবে না’
২৫ আগস্ট ২০২৩ ২১:৩২
ঢাকা: জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে আর ক্ষমতায় থাকা যাবে না বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন আমির বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকালে শ্যামলী স্কয়ায়ের সামনে আয়োজিত পতাকা মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি এ কালো পতাকা গণমিছিল করে।
আমির খসরু বলেন, ‘এই ফ্যাসিস্ট বিদায় করার জন্য বাংলাদেশের মানুষ শপথ নিয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ যখনই সিদ্ধান্ত নেয় তারা কোনো দিন পিছপা হয় নাই। স্বাধীনতা যুদ্ধে পিছপা হয়নাই, ভাষা আন্দোলন পিছপা হয় নাই, স্বৈরাচার আন্দোলনে পিছপা হয় নাই। প্রতিবার বাংলাদেশের মানুষ যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার প্রতিপক্ষ পরাজিত হয়েছে।’
‘আজকে বাংলাদেশের মানুষের প্রতিপক্ষ কে? হাসিনা। বাংলাদেশের মানুষের প্রতিপক্ষ হয়ে কেউ জয়ী হতে পেরেছে। পারে নাই। তাই আমি বলব, বাংলাদেশের মানুষের প্রতিপক্ষ কেউ হবেন না। পুলিশ ভাইয়েরা হবেন না, র্যাব ভাইয়েরা হবেন না, আনসার হবেন না, সরকারি কর্মকর্তারা হবেন না, বিচারকরা হবেন না’— বলেন আমীর খসরু।
তিনি বলেন, ‘সবার কাছে আমাদের বার্তা, দেয়ালের লিখন পড়তে শিখুন। দেয়ালে কি লেখা আছে শেখ হাসিনা বিদায় হও। যারা এখনও দেয়ালের লিখন পড়তে পারছেন না তাদেরকে বলছি দেয়ালের লিখন পড়েন, সিদ্ধান্ত নেন, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারবেন না। আর নিলে এই দায়-দায়িত্ব আপনাদের ওপরে বর্তাবে।’
আমির খসরু বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছেন বাংলাদেশের অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। দলবল নিয়ে, পরিবার নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের করের টাকা খরচ করে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছেন কী জন্য? ব্রিকসের মেম্বার হবেন। কি হয়েছে (সদস্য হতে পেরেছে)? যে কাজে গিয়েছেন ওই কাজ তো হয় নাই। সতুরাং প্রত্যেক জায়গা থেকে প্রত্যাখ্যাত হবেন। সবাই প্রত্যাখ্যান করবে অবৈধকে। মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ঘুরে ঘুরে আজ গ্রহণযোগ্যতা পাবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আজকে এই সমাবেশে আসার সময় একটা ছবি দেখলাম। ওই দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা গেছে ব্রিকসে, সবাই তো মেম্বার হয় নাই, বাংলাদেশে হয় নাই, অনেক হয় নাই। তবে সবাই মিলে একটা ছবি তুলেছেন এই ছবি হচ্ছে অফিশিয়াল ছবি। ওই ছবিতে সবাই আছে কিন্তু আমাদের অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নাই।’
‘উনার ছবি কার সঙ্গে? উনি আর উনার মেয়ে (সায়মা ওয়াজেদ) চায়নার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। পত্রিকায় দেখেছেন না। চীনের প্রধানমন্ত্রীর শি জিনপিং-এর সাথে বাইলেটারেল মিটিং করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকায় যেতে হবে কেন? তৃতীয় কোনো দেশে গিয়ে কেউ বাইলেটারেল মিটিং করে না। বাইলেটারেল মিটিং হয় যে দেশে যাচ্ছেন সেই দেশের সঙ্গে। তৃতীয় দেশে গিয়ে বাইলেটোরেল মিটিং উনাকে করতে হচ্ছে’— বলেন আমীর খসরু।
তিনি বলেন, ‘ওইখানে (দক্ষিণ আফ্রিকা) প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছেন। ওই বক্তব্যে নৌকায় ভোট দিতে বলেছেন। চিন্তা করেন। আরে কোথায় যাইয়া কি কয়? ভোট হবে বাংলাদেশে, উনি দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে ভোট চাইছেন অবস্থা কি বোঝেন। আর কী করছেন? সেখানে বিএনপিকে গালি-গালাজ করছেন। স্বভাবজাতভাবে যা করেন, এটা তো প্রত্যেকদিন আপনি বাংলাদেশে করতেছেন। জনগণের করের টাকা খরচ করে দলবল নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে বিএনপিকে গালিগালাজ করার প্রয়োজন নাই।’
একই দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি নয়া পল্টন থেকে রাজধানী মার্কেট পর্যন্ত কালো পতাকা গণমিছিল করে।
বিএনপি ছাড়াও শুক্রবার রাজধানীতে কালো পতাকা গণমিছিল করেছে শাহবাগে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিজয়নগরে ১২ দলীয় জোট, পুরানা পল্টনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, আরামবাগে গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, পান্থপথে এলডিপি, জাতীয় প্রেসক্লাবে লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ(রেজা কিবরিয়া)ও সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষ, ফকিরাপুল কালভার্ট রোডে গণঅধিকার পরিষদ(নূর), মালিবাগে এনডিএম, সেগুনবাগিচায় গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বিজয় নগর শ্রমভবনের সামনে এবি পার্টি, বিজয়নগর পানি ট্যাংকের জনতার অধিকার পার্টি কাছ থেকে কালো পতাকা মিছিল বের করে।
মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বক্তব্য রাখেন।
গণমিছিলে বিএনপির আহমেদ আজম খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, জয়নাল আবেদীন ভিপি জয়নাল, কামরুল ইসলাম, শাহজাদা মিয়া, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, আতাউর রহমান ঢালী, মাহবুবউদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শ্যামা ওবায়েদ, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, নাজিমউদ্দিন আলম, আজিজুল বারী হেলাল, রাকিবুল ইসলাম বকুল, শামীমুর রহমান শামীম, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, যুব দলের মামুন হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, নায়েবা ইউসুফ, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, ছাত্র দলের সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ অন্য নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
সারাবাংলা/এজেড/এমও