বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা
২৬ আগস্ট ২০২৩ ১৩:৫১
রংপুর: ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৬টায় তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০ ও রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজে ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, ভারতের উজানে পানি বৃদ্ধির কারণে গজলডোবা ব্যারেজের সবগুলো গেট পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই খুলে দেওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। ফলে বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীর পানি মারাত্মক বেড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তাপাড়ের বিভিন্ন এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে গবাদিপশু নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। দুর্যোগ এড়াতে তিস্তা নদীর অববাহিকা, চর, দ্বীপচরে রেড এলার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর, নোহালী, লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম ও কাউনিয়া উপজেলার ধুসমারার চর, আজম খাঁ চর, হাইবত খাঁ গোনাই, পল্লীমারী, চর একতা, চর মিলনবাজার, গোপীকাল্লা, ডালার চর ও চর গোদাই গ্রামে পানি প্রবেশ করায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাড়িঘর তিন থেকে চার ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। সেইসঙ্গে ধানসহ শষ্য ক্ষেতগুলো তলিয়ে আছে পানিতে। পানিবন্দি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে ও পাউবো বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
গঙ্গাচড়ার দক্ষিণ কোলকোন্দের বাসিন্দা ও শিক্ষক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘তিস্তা নদী আমাদের জন্য অভিশাপ। প্রতিবছর নদীর সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের জীবনযাপন করতে হয়। চরাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ায় আমরা নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছি। নিজেদের খাবারের পাশাপাশি গো-খাদ্যের চরম সংকট তৈরি হয়েছে। সরকারের বড় ধরণের প্রকল্প হাতে নিয়ে তিস্তাপাড়ের মানুষের দুঃখ ঘোচানো এখন সময়ের দাবি।’
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তিস্তার পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। সে কারণে দুর্গম চরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। অবিরাম বর্ষণ আর ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে পানি মারাত্মক বৃদ্ধি পেয়েছে।’