অবশেষে শিশুপার্কে আশার আলো, চালু হতে পারে ২০২৬-এ
২৯ আগস্ট ২০২৩ ০৮:০০
ঢাকা: পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রাজধানীর শিশু-কিশোরদের চিত্তবিনোদনের অন্যতম স্থান শিশুপার্ক। সংস্কারের জন্য প্রায় ছয় শ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তুত থাকলেও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতির কারণে সে প্রকল্প এতদিন ধরে পড়ে ছিল ব্রাত্য হয়ে। শেষ পর্যন্ত নগরবাসী, বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের চিত্তবিনোদন এবং শারীরিক-মানসিক বিকাশ বিবেচনায় নিয়েছে সরকার। শিশুপার্কের সংস্কারকাজের প্রকল্পটিও তাই শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীন হোসেন শহীদ শিশুপার্ক আধুনিকীকরণের জন্য ৬০৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উত্থাপনের জন্য প্রস্তুত। আজ মঙ্গলবারই (২৯ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী ও একনেক সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রকল্পটি উত্থাপন করার কথা রয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে শিশুপার্কের কাজ শেণ করার লক্ষ্য থাকবে। সেক্ষেত্রে ২০২৬ সালের মাঝ পেরিয়ে প্রায় আট বছরের বিরতিতে হয়তো ঢাকাবাসী ফের সুযোগ পাবে শিশুপার্কে যাওয়ার।
কমিশন সূত্র আরও বলছে, প্রকল্প প্রস্তাবনা নিয়ে তাদের আপত্তি নেই। তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন এবং রমনা লেক ও রমনা পার্কসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে চলাচলের ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ছিল আগেও। ফিজিবিলিটি স্টাডির মাধ্যমে এসব ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পর্যায়ে আন্ডারপাস বা অন্য কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করে এই যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে বলে কমিশন মত দিয়েছে।
প্রকল্প প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশুপার্ক আধুনিকীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজেস্ব তহবিল থেকে ৪৮৩ কোটি ৪ লাখ ৮২ হাজার টাকা এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসিসিসি) নিজেস্ব অর্থায়ন থেকে ১২০ কোটি ৭৬ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ের হিসাব করা হয়েছে।
শিশুপার্ক আধুনিক করার এই প্রকল্পে ১৫টি বিভিন্ন ধরনের আধুনিক রাইড স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি পার্কের চারটি পয়েন্টে সেন্ট্রাল সাউন্ড সিস্টেমসহ চারটি এলইডি স্ক্রিন স্থাপনের কথা বলা আছে। এর বাইরে কাজের জন্য একটি করে জিপ ও পিকআপ, দুটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপসহ দুটি করে কালার প্রিন্টার ও ফটোকপি মেশিন কেনার কথা বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অন্যদিকে সরকারের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগও প্রকল্পটিকে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় উল্লেখ থাকা নাগরিকদের জন্য নগর কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাপ্রাপ্তি নিশ্চিতের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে অভিহিত করেছে।
পরিকল্পনা কমিশনের মতামত
শিশুপার্ক আধুনিকায়নের প্রকল্পটি নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের অভিমত, নগরবাসীকে বিনোদন সেবা দেওয়ার পাশাপাশি শিশুদের চিত্তবিনোদনের সুযোগ তৈরির মাধ্যমে শিশুপার্ক দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তাই প্রস্তাবিত প্রকল্পটি অনুমোদন করা যেতে পারে।
এদিকে শিশুপার্কটি রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট শাহবাগে অবস্থিত। এর আশপাশেই রয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তন, রমনা লেক, রমনা পার্ক। শিশুপার্ক থেকে এসব স্থান ও স্থাপনাতে সহজে চলাচলের ব্যবস্থা করতে দ্বিতীয় পর্যায়ের আন্ডারপাস কিংবা আন্ডারপাস-ওভারপাসের মিশ্র কোনো পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হবে বলেও মত দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
সারাবাংলা/জেজে/টিআর
একনেক ঢাকা শিশুপার্ক পরিকল্পনা কমিশন শিশুপার্ক সোহরাওয়ার্দী শিশুপার্ক