‘মোড়লরা যতই উঠেপড়ে লাগুক, দেশকে ব্যর্থ করতে পারবে না’
৩১ আগস্ট ২০২৩ ০০:১৩
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে কোনো শক্তির চেষ্টাতেই বাংলাদেশকে কেউ ব্যর্থ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, কারণে মোড়ল সাহেবরা উঠেপড়ে লেগেছে। তবে কোনো ভয়ের কারণ নেই। আমাদের সঙ্গে রয়েছেন একজন শেখ হাসিনা। সেই দুঃসাহিক নাবিক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই যাবে। কেউ কোনো ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশকে ব্যর্থ করতে পারবে না।
বুধবার (৩০ আগস্ট) রাতে রাজধানীর অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবসের স্মরণসভায় বরিশাল বিভাগ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।
অনুষ্ঠানে নানক বলেন, একাত্তরে যারা পরাজিত হয়েছিল আমাদের যুদ্ধের কৌশলের সঙ্গে, সেই পরাজিত শক্তি, যারা আমার স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে তারা চুপি চুপি সংঘবদ্ধ ছিল। সেদিন আমাদের নেতৃত্ব বা আমরা সতর্ক হতে পারিনি। সতর্ক হতে পারলে সেই ষড়যন্ত্রও ব্যর্থ করে দেওয়া সম্ভব ছিল।
আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ ২১ বছর এই জাতি কলঙ্ক মাথায় নিয়ে ঘুরেছে। এই খুরনি জিয়াউর রহমান, আমি কোনো প্রতিহিংসায় বলছি না, জিয়াউর রহমান সেদিন উপপ্রধান হিসেবে বলেছিল, তোমরা এগিয়ে যাও আমি তোমাদের সঙ্গে আছি। আর জিয়াউর রহমান যে পরিকল্পনার মূল কলকাঠি নেড়েছে তার প্রমাণ দিয়েছেন হত্যাকারীদের আশ্রয় দিয়ে। ওই হত্যাকারী ডালিম, রশিদ, শাহরিয়ার, নূরদের আশ্রয় দিয়েছে জিয়াউর রহমান। এই খুনিদের নিরাপদে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এই খুনিদের বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছে জিয়াউর রহমান।
‘তাদের খুশি করতে একটি দল গঠন করার সুযোগ করে দেন। তার নাম ছিল ফ্রিডম পার্টি। শুধু তাই নয়, ফ্রিডম পার্টিকে পত্রিকার ডিক্লারেশন দিয়েছিলেন। তার নাম ছিল দৈনিক মিল্লাত। জিয়াউর রহমান যে (বঙ্গবন্ধু হত্যায়) জড়িত তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো খুনি মোশতাক ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের যে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল, সেই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে সংসদে আইনের স্বীকৃতি দিয়ে চিরদিনের জন্য খুনিদের রক্ষা করার চেষ্টা করেছিল জিয়া,’- বলেন নানক।
তিনি আরও বলেন, আমরা লড়াই করেছিলাম। আমরা স্লোগান দিয়েছি সারাদেশে। এক মুজিবের রক্ত থেকে লক্ষ মুজিব জন্ম নেবে। মুজিব হত্যার পরিণাম, বাংলা হবে ভিয়েতনাম। আমু ভাই এখানে বসা আছেন। তিনি বাংলাদেশে সর্বপ্রথম একটি স্লোগান, একটি বক্তব্য এনেছিলেন। তখন সবাই হতচকিত হয়ে গিয়েছিল। আমার মনে আছে দৈনিক সংবাদের প্রথম পৃষ্ঠায় ফোল্ডারের নিচে তিন কলামে নিউজটি ছাপা হয়েছিল। সেটি হলো- বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা-শেখ রেহানাকে দেশে সসম্মানে ফিরিয়ে আনতে হবে।
জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এবং সন্তান তারেক রহমানও জিয়াউর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে বলে উল্লেখ করেন নানক। বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতাদের হত্যা করে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়ে রামরাজত্ব কায়েম করতে চেয়েছিল তারা।
বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট শাসনের প্রসঙ্গ তুলে নানক বলেন, সেদিন একটি সরকারের পাশে আরেকটি সরকার ছিল। একটা ছিল খালেদা-নিজামী সরকার, আরেকটি ছিল হাওয়া ভবন সরকার। তার প্রধান ছিল তারেক রহমান। ওরা যেভাবে এই দেশে বাংলা ভাই তৈরি করেছিল, আব্দুর রহমান তৈরি করে সারাদেশে একযোগ সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছে, বিচারিক আদালতে বোমা হামলা চালিয়েছে; সেই ওরা আবার ফিরে আসতে চায়।
সরকারের টানা মেয়াদে আর্থসামাজিক অবকঠামোগত উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরার পাশাপাশি আজ বাংলাদেশ পৃথিবীতে এক উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী নানক। বলেন, আবার এক নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। এত উন্নয়ন ভালো লাগে না। সেই কারণে মোড়ল সাহেবরা উঠেপড়ে লেগেছে। তবে ভয়ের কারণ নেই। আমাদের সঙ্গে একজন শেখ হাসিনা আছেন। তার নেতৃত্বে সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই যাবে।
বরিশাল বিভাগ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. মতিউর রহমান। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব মো. জসিম উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু আ হামিদ জমাদ্দার, দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব মু মাহবুব হোসেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারক, নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর