Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

র‍্যামন ম্যাগসাইসাই পেলেন জাগো ফাউন্ডেশনের করভি রাকসান্দ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩১ আগস্ট ২০২৩ ১০:৩০

ঢাকা: জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা করভি রাকসান্দ ‘এশিয়ার নোবেল’খ্যাত র‌্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সকালে ফিলিপাইন থেকে এ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।

ইমার্জেন্ট লিডারশিপ বিভাগে এ পুরষ্কার পেয়েছেন করভি রাকসান্দ। চলতি বছরের ১১ নভেম্বর ফিলিপাইনের ম্যানিলার মেট্রোপলিটন থিয়েটারে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে।

র‍্যামন ম্যাগসাইসাই অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য করভি রাখসান্দকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষুধা নির্মূল ও টেকসই জীবনমানে অবদান রাখার জন্য পূর্ব তিমুরের ইউজেনিও লিমোস, বৈষম্য দূর করা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে ভূমিকা রাখতে ফিলিপাইনের মিয়াম করোনেল ফেরার এবং দারিদ্র‍্য নির্মূল ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে অবদানের জন্য ভারতের রবি কান্নানকে এ বছর এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

করভি রাকসান্দ বাংলাদেশ থেকে সম্মানজনক এই পুরস্কার পাওয়া ত্রয়োদশ ব্যক্তি। তার আগে সর্বশেষ ২০২১ সালে এই পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ফেরদৌস কাদরী।

ম্যাগসাইসাই অ্যাওয়ার্ড কমিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, স্বস্তির ও নিরাপদ জীবন থেকে অধিকারবঞ্চিতদের পাশে কাজ করতে এগিয়ে আসার যে জীবন করভি রাকসান্দ বেছে নিয়েছেন, তার সেই সাহসিকতাকেই স্বীকৃতি দিয়েছে বোর্ড অব ট্রাস্টি। তার কঠোর ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব শিক্ষার গণতন্ত্রায়নের ভূমিকা রেখেছে। তার সামাজিক রূপান্তরের আহ্বান উৎসাহিত করেছে হাজারও তরুণকে। সামাজিক রূপান্তরের জন্য তার অদম্য মনোভাব, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব ও দৃঢ় প্রতিশ্রুতির জন্য কমিটি তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পুরস্কারজয়ের প্রতিক্রিয়ায় করভি রাকসান্দ বলেন, কেবল আমার নয়, আমাদের এই যাত্রায় যে মানুষগুলো ভূমিকা রেখেছেন তাদের প্রত্যেকের কাজের স্বীকৃতি এই পুরস্কার। আমরা সবাই মিলে প্রমাণ করেছি যে তরুণরা কেবল জাতির ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির বাহকই নয়, তারা লক্ষ্য পূরণেও সক্ষম।

সব শিশুর জন্য শিক্ষার সুযোগ তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ২০০৭ সালে জাগো ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন করভি রাকসান্দ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অধিকারবঞ্চিত শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষাদানের পাশাপাশি অনগ্রসর এলাকায় অবকাঠামো ও শিশুদের শিক্ষা উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে সংস্থাটি। ঢাকার রায়ের বাজার বস্তিতে একটি ভাড়া করা কক্ষে ১৭ জন ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে শুরু করা এই ফাউন্ডেশনের বর্তমানে দেশজুড়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি।

সামাজিক উন্নয়ন প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে করভি এর আগেও বেশ কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরষ্কার অর্জন করেন। ২০২২ সালে বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের শেখ হাসিনা যুব স্বেচ্ছাসেবক পুরষ্কার, ২০২১ সালে যুক্তরাজ্য সরকারের কমনওয়েলথ পয়েন্ট অফ লাইট পুরষ্কার, ২০১৭ সালে অ্যান্ড্রু ই. রাইস অনারেবল মেনশন অ্যাওয়ার্ড, ২০১৩ সালে কমনওয়েলথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডস, এবং ২০১০ সালে এইচআরএইচ প্রিন্স অফ ওয়েলস থেকে আন্তর্জাতিক বিভাগে মোজাইক ট্যালেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।

এছাড়াও তিনি ২০১৫ সালে এশিয়া সোসাইটির এশিয়া ২১ ইয়াং লিডারের তালিকায় এবং ২০১৫ সালে বাংলাদেশের শীর্ষ দশ অসামান্য তরুণের তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন। এর আগের বছর ২০১৪ সালে ব্রিটিশ বাংলাদেশ পাওয়ার ইনস্পিরেশনের শীর্ষ ১০ বিশ্বব্যাপী অনুপ্রেরণামূলক বাংলাদেশির তালিকায় ছিলেন। ছিলেন ২০১৩ সালের শীর্ষ ৯৯ জন অনুর্দ্ধ ৩৩ ফরেন পলিসি লিডারদের তালিকায়।

বিজ্ঞাপন

ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট র‍্যামন ম্যাগসাইসাইয়ের স্মরণে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। জনসেবা থেকে শুরু করে সামাজিক উদ্ভাবনের মতো বিভিন্ন খাতে এশিয়ার যারা নিষ্ঠা, সাহসিকতা ও আত্মোৎসর্গকারী মানসিকতা নিয়ে এশিয়ান সমাজে ভূমিকা রেখে চলেছেন, তাদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। চলতি বছর ৬৫-তম র‍্যামন ম্যাগসাইসাই পুরষ্কার দেওয়া হল।

১৯৫৭ সালে মাত্র ৫০ বছর বয়সে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট র‍্যামন ম্যাগসাইসাই। পরের বছর ১৯৫৮ সাল থেকেই তার নামে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। ৩১ আগস্ট র‌্যামন ম্যাগসাইসাইয়ের জন্মদিন হওয়ায় প্রতিবছর এই দিনটিতেই ম্যানিলা থেকে এ পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

করভি রাকসান্দ করভী রাখসান্দ জাগো ফাউন্ডেশন র‌্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর