Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আনসার আল ইসলামের ৫ সদস্য গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩১ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৫৭

বাগেরহাট: নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) র‌্যাব-৬ এর একটি অভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাগেরহাটে অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।

র‌্যাব-এর মিডিয়া প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আজ দুপুরে র‌্যাব- ৬ এর সদর দফতরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

র‌্যাব পক্ষ থেকে জানানো হয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর খুলনা, বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত পিরোজপুরের মৃত কামাল গাজীর ছেলে মো. তরিকুল ইসলাম (২৩), গোপালগঞ্জের গাউছ মোল্লার ছেলে মো. আকাশ ওরফে আব্দুল্লাহ (২৩) ও মোহাম্মদ জাকির ফকিরের ছেলে তাজিমুদ্দিন ওরফে জসীমউদ্দীন (২১), মাদারীপুরের মতিউর রহমানের ছেলে ইসমাইল হাসান অনিক (২০) এবং গোপালগঞ্জের সৈয়দ আহাদুজ্জামানের ছেলে মো. রিপন (২০)’কে বাগেরহাট থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে উগ্রবাদী বই ও সাংগঠনিক কার্যক্রম সংক্রান্ত নোট বই জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর সদস্য বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। তারা বিভিন্ন সময় অনলাইনে তামিম আল আদনানী, হারুন ইজহার, গুনবীসহ বিভিন্ন আধ্যাত্মিক নেতার বক্তব্য দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে পড়েন।

র‌্যাব জানায়, জঙ্গিরা সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভুল তথ্য প্রদান করে তাদের আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন মাদ্রাসা ও সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ করতেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তারা মসজিদ, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা পরিচালনা করতেন। তারা বিভিন্ন অপব্যাখ্যা ও মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে দেশের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিতৃষ্ণা তৈরি করে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য সদস্যদেরকে উগ্রবাদী করে তুলতেন।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে বাগেরহাটের একটি মাদরাসায় অধ্যয়নরত ছিলেন। ২০২১ সালে খুলনার দিঘলীয়াতে একটি মাদরাসায় অধ্যয়নকালীন গ্রেফতারকৃত তরিকুলের মাধ্যমে ‘আনসার আল ইসলাম’ এ যোগ দেয়। সে দিঘলীয়াতে মাদরাসায় অধ্যয়নকালীন তরিকুলের সঙ্গে অন্যান্য সহপাঠীদের মধ্যে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। পরে বাগেরহাটে মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালীনও দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। দাওয়াতি কার্যক্রমে তার পারদর্শিতার জন্য খুলনা ও বাগেরহাট অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এছাড়াও সে সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহের পাশাপাশি মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও এবং বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা সরবরাহ করতেন বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত তরিকুল গোপালগঞ্জের একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। তিনি ২০২১ সালে দিঘলীয়াতে একটি মাদরাসায় অধ্যয়নকালীন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর ওমর নামের একজন উচ্চপদস্থ সদস্যের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ‘আনসার আল ইসলাম’ এ যোগদান করেন। তিনি ওমর নামে ওই ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে আল কায়েদার বিভিন্ন পেইজ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন সাইট ও বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে প্রবেশ করে পর্যালোচনা করে আরও বেশি জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হন এবং নিজে দাওয়াতি কার্যক্রমে যুক্ত হন এবং সদস্য সংগ্রহ করেন।

পরবর্তীতে সে দিঘলীয়াতে মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালীন আবদুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন সহপাঠীকে দাওয়াতি কার্যক্রমের মাধ্যমে সংগঠনে যুক্ত করেন। তিনি গোপালগঞ্জে মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং খুলনা, বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ এলাকায় দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এছাড়াও তিনি পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখতেন। তিনি সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ, মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও এবং বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা সরবরাহ করতেন বলে জানা যায়। সংগৃহীত অর্থ ওমর নামক ব্যক্তির কাছ থেকে সংগ্রহ করে সংগঠনের কাজে ব্যবহার করতেন।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতারকৃত তাজিমুদ্দিন গোপালগঞ্জের স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ইমামতি করতেন। সে দিঘলিয়াতে একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালীন গ্রেফতারকৃত আবদুল্লাহর সহপাঠী ছিলেন। তিনি ২০২১ সালে আব্দুল্লাহ’র মাধ্যমে আনসার আল ইসলাম এর মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়। সে বিভিন্ন সময় তরিকুল ও আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে তার মাদরাসা,বাসায় মিটিং করতেন। সে তরিকুল এর কাছ থেকে বিভিন্ন উগ্রবাদী বই, মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সংগ্রহ করতেন। তিনি তার নিজ এলাকায় দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।

গ্রেফতারকৃত ইসমাইল গোপালগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ছিলেন। তিনি তরিকুলের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ‘আনসার আল ইসলাম’ এ যোগদান করেন। তিনি তরিকুল এর কাছ থেকে বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা, মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সংগ্রহ করতেন। তিনি তার নিজ এলাকা মাদারীপুরে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন এবং বিভিন্ন লোকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত রিপন ২০২২ সালে আব্দুল্লাহ’র মাধ্যমে আনসার আল ইসলাম এর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করেন। গ্রেফতারকৃত রিপন বিভিন্ন সময়ে আব্দুল্লাহ’র সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা সংগ্রহ করে সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম চালাতেন।

তরিকুল এবং আব্দুল্লাহ’র মাধ্যমে পার্শ্ববতী বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত হয়েছিলেন রিপন। জিহাদের নামে হিজরত করে পার্শ্ববর্তী দেশে যাওয়ারও পরিকল্পনা ছিল তার।

সারাবাংলা/একে

আনসার-আল ইসলাম জঙ্গি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর