ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: মেয়র আতিক
৩১ আগস্ট ২০২৩ ২০:৩৯
ঢাকা: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা ও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে আগারগাঁওয়ের শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারণাকালে ডিএনসিসি মেয়র এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ‘এডিস মশা মারার জন্য আসলে কামান বা বন্দুক দরকার নেই। এডিস মশা মারার জন্য শুধু একটি কাজ করতে হবে, সেটি হল পানি জমতে দেওয়া যাবে না। বাসা বাড়ির আঙিনা, বারান্দা, ছাদ ও অব্যবহৃত পাত্রের জমা পানি ফেলে দিলেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হল সচেতনতা। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
মেয়র আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু সচেতনতায় জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে ‘ফাইট উইথ বাইট’ (#fightwithbite) শিরোনামে হ্যাশট্যাগে প্রচারণা শুরু করেছি। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একটি সহজ ও বড় প্ল্যাটফর্ম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাইকে এই সচেতনতা বার্তা ছড়িয়ে দিতে অনুরোধ করছি।’
ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রমে ফেসবুক ইনফ্লুয়েন্সাররা যুক্ত হয়েছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানাতে জনপ্রিয় ফেসবুক কনটেন্ট ক্রিয়েটর বাপকা বেটার বাবা ও ছেলে এসেছেন, সিজদাস ক্লাসরুমের সিজদাহ এসেছেন। অন্যান্য ফেসবুক ইনফ্লুয়েন্সারদের অনুরোধ করবো আপনারাও মানুষকে সচেতন করুন। সবার মধ্যে এই বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।’
ভিন্নধর্মী এই আয়োজন সম্পর্কে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা মশক নিধনের পাশাপাশি প্রচারণা চালাচ্ছি। একাজে সবাইকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি। ফেসবুকে যারা জনপ্রিয় তাদেরকে ক্যাম্পেইনে যুক্ত করেছি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত একটি নাট্যদল নাটক প্রদর্শনের মাধ্যমে জনগনকে সচেতন করা হবে। আগামী এক মাস ডিএনসিসি’র দশটি অঞ্চলে পথনাটক করে তারা জনগণকে সচেতন করবে। এডিস মশার প্রতিকৃতি নিয়ে দশটি অঞ্চলে ২০টি রিকশার মাধ্যমে মাইকিং করে জনগণকে সচেতন করা হবে।’
ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এডিস মশা বাইরের পাশাপাশি ঘরে জমা পানিতে বেশি জন্মায় তাই এডিস মশাকে অনেক সময় বলা হয় এটি একটি গৃহপালিত মশা। তাই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ঘর-বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মশার কামড় থেকে নিজেদের বাঁচাতে চেষ্টা করতে হবে। সবাই সচেতন হলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
ক্যাম্পেইনে আরও উপস্থিত ছিলেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোশতাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখন বৃষ্টির মৌসুম। বৃষ্টি আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই উপকারী। এটি ধুলাবালি অপসারণ করে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখে। তবে বৃষ্টির পানি জমে থাকলে সেখানে এডিস মশা জন্মায়। এটি বিপদের কারণ। তাই তিন দিনের মধ্যে জমা পানি ফেলে দিতে হবে।’
এ সময় ফেসবুক ইনফ্লুয়েন্সার সিজদাহ্ এবং বাপকা বেটার ঋতুরাজ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় তুলে ধরে সবাইকে সচেতন করেন।
ক্যাম্পেইনে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. এ.কে.এম শফিকুর রহমান, উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ, ১১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান, ২৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফোরকান হোসেন, ৪১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মতিন এবং ডিএনসিসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সারাবাংলা/আরএফ/একে