Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সারিয়াকান্দিতে যমুনার পানি বিপৎসীমার উপরে, স্পারে ধস

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:৪৫

বগুড়া: উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে নদী তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় যমুনার ভাঙন-রক্ষার স্পারের (তীর রক্ষার জন্য কংক্রিট পাথরের বাঁধ) প্রায় ৩০ মিটার ধসে যায়।

উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা এলাকায় ভয়াবহ ভাঙনে মুহূর্তেই ৮০টি বসতবাড়ির জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও মালামাল নদীতে ভেসে গেছে। উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলেছে। এছাড়া ভেসে যাওয়া ঘরবাড়ি ও মালামাল উদ্ধার করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

ভাঙনের খবর পেয়ে বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান, জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, সারিয়াকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম মন্টু মন্ডল, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন।

বুধবার (৩০ আগস্ট) রাতে উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া ২নং স্পারের গোড়ায় প্রায় ৩০ মিটার ধসে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদারের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করে। এলাকার লোকজনও রাতভর স্বেচ্ছাশ্রমে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজে সহায়াতা করেন। এতে স্পারটি রক্ষা পায়। স্পার ধসে গেলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতো। গৃহহীন হয়ে পড়তো হাজারও মানুষ।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি সকালেই বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। পানি বাড়ার সঙ্গে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনার তীব্র স্রোতে নদীতীর সংরক্ষণ বাঁধ ও নদী ভাঙন নিয়ন্ত্রণে নির্মিত স্পারের বেশ কিছু অংশ ধসে গেছে। নদীর পানি বৃদ্ধি ও ভাঙনে নদী তীরবর্তী এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অপরদিকে পানি বাড়ার কারণে বেশ কিছু এলাকার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা বন্যাসহ ভাঙ্গনের কারণে সৃষ্ট যে কোন অবস্থা মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে নদীতীর সংলগ্ন এলাকার লোকজনকে প্রয়োজনবোধে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য মাইকে প্রচার করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আরও জানা যায়, বুধবার রাতে উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া স্পারে আকস্মিক ধস নামে। স্পারের কংক্রিট ও মাটির শ্যাংকের মাঝে এই ধস নামে। নদীর তীব্র স্রোত আঘাত হানায় ধসের সৃষ্টি হয়েছে। এতে হাসনাপাড়া স্পার-২ এর ৩০ মিটারের একাংশ ধসে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ে।

খবর পেয়ে রাতেই প্রশাসনিক ও পাউবোর কর্মকর্তারা সেখানে যান এবং জিও ব্যাগ ফেলা হয়। ধসে পড়া অংশের মধ্যে ১০ মিটার বেশি খারাপ অবস্থায় ছিল। তাৎক্ষণিক বালিভর্তি জিওব্যাগজিও ব্যাগ ফেলায় ধস বন্ধ হয়েছে এবং হাসনাপাড়া স্পারটি বর্তমানে ঝুঁকিমুক্ত আছে। হাসনাপাড়া ছাড়াও কামালপুর ইউনিয়নে নদী তীর সংরক্ষণ (ডান তীর) বাঁধে ধস নেমেছে। সেখানে প্রায় ৪০০ মিটার ধসে গেছে। ধস ঠেকাতে জিএটেক্সের বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে বলে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হক।

স্থানীয় লোকজন জানান, কামালপুরের ইছামারা, দক্ষিণ ফকির পাড়া ও কামালপুর গ্রামে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বেশ কিছু বাড়ি ঘর ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সবুজ কুমার বসাক জানিয়েছেন, ভাঙন ও যমুনার পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী তীরবর্তী এলাকা গুলোতে সর্তকতা মূলক মাইকিং করা হয়েছে।

তিনি জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কিছু নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ছয় হেক্টর জমির ফসল ক্ষতির মুখে পড়েছে। এছাড়া ভাঙনের কারণে প্রায় ১০০টি পরিবার তাদের বাড়ি ঘর ইতোমধ্যে সরিয়ে নিয়েছেন।

সারাবাংলা/এনইউ

ধস বগুড়া যমুনা পানি স্পার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর