Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘৩ বছরে বৈদেশিক ঋণ ৫০ থেকে বেড়ে ১০০ বিলিয়ন ডলারে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:১৪

ঢাকা: বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্ববধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বলা হয়ে থাকে আমাদের বৈদেশিক ঋণ জিডিপির ৩০ শতাংশর মধ্যে আছে। কিন্তু গত তিন বছরে আমাদের ঋণ ৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। আগামী ৩/৪ বছর পরে আমাদের ৫ বিলিয়ন ডলার করে বছরে ঋণ ফেরত দিতে হবে। যেভাবে ঋণ গ্রহণ বাড়ছে এভাবে যদি বাড়তে থাকে থাকলে আগামীতে প্রতি বছর আরও বেশি ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টারস ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেমের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধা।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমরা যেসব বড় বড় প্রকল্পগুলো নিচ্ছি, এগুলোর ব্যয়ের সাশ্রয় হচ্ছে কিনা, প্রকৌশল দিক থেকে কোনো ত্রুটি আছে কিনা? বাস্তবায়নের দক্ষতা আছে কিনা? আমি প্রকল্প পাস করলাম ৫ বছরে জন্য বাস্তবায়ন করতে। দেখা গেল ১৫ বছরেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এতে খরচ ও সময় তিন গুন বেড়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকটি প্রজেক্টেই যদি এই রকম হয় তাহলে তো সব প্রজেক্টের খরচ ও সময় তিনগুন বাড়বে। তাহলে কেন আমরা এসব অব্যাহত রাখছি। আমাদের ঋণের সক্ষমতা কতটুকু, ভবিষ্যতে দেনার দায় কতটুকু হবে? আমাদের সক্ষমতা কতটুকু বাড়বে। এই হিসাবটা কে করছে। বর্তমানে আমরা যেখানেই ঋণ পাচ্ছি সেখান থেকেই নিচ্ছি। শুরুর দিকে এটা ভালো কিন্তু একটা জায়গায় এসে চিন্তা করতে হবে আমরা কোথায় আছি, কতদূর যেতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যে সব বড় অকবকাঠামো করছি তার প্রায় সবই ঋণের টাকা। আমরা এভাবে সব অবকাঠামো ঋণের টাকায় করতেই থাকব, একটার পর একটা প্রকল্প হাতে নিতেই থাকব? কিন্তু প্রশ্ন হলো এক সময় আমাদের এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এসব অবকাঠামো ব্যবহারে সমন্বয় না থাকলে এর সুফল ভোগ করা যাবে না।’

‘ভিয়েতনামে আমাদের দেশের চেয়ে অনেক বেশি অবকাঠামোতে বিনিয়োগ হয়েছে। এই বিনিয়োগরে ফলে প্রতি বছর সেখানে ১০ বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিযোগ হচ্ছে। ফলে তাদের দেনার দায় পরিশোধে সমস্যা হবে না। কিন্তু বিনিয়োগ করতে হলে কেবল অবকাঠামো নির্মাণ করলেই হবে না। বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে বছরে ১ বিলিয়ল ডলার ভিয়েতনামে হচ্ছে ১০ বিলিয়নের বেশি। আমাদের দেশে আমলাতান্ত্রিক জঠিলতা, গ্যাস, বিদ্যাৎ ও জমির সমস্যার কারণে বিনিয়োগ বাড়ছে না। যদিও সরকার বেশি কিছু ইপিজেড করেছে।’

বিজ্ঞাপন

ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘এক সময় আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছিল। তখন আমরা যত ইচ্ছা প্রকল্প নিচ্ছিলাম। কারণ আমাদের তো যথেষ্ট রিজার্ভ আছে। কিন্তু ভবিষ্যতে হঠাৎ করে যেকোনো চাপ আসতে পারে সেটা চিন্তায় ছিল না। আমরা কখনও সমন্বিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা অনুযায়ী চলিনি। আমাদের আত্মতুষ্টি এসে গিয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘রিজার্ভ রাখা হয় এ কারণে যাতে বিদেশিদের আস্থা ও বিনিয়োগ বাড়ে। এটা কখনোই নিজেদের ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয় না। এটা যেন আপদের সময়ে কাজে লাগে। রিজার্ভের মাধ্যমে সারা দুনিয়াকে জানানো হয় যে আমাদের অর্থনীতি স্থিতিশীল আছে। যাতে এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ে।’

সারাবাংলা/জিএস/ইআ

টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর