বিশ্বমানের যন্ত্রপাতি যুক্ত হচ্ছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:০৪
ঢাকা: বিশ্বমানের যন্ত্রপাতি যুক্ত হচ্ছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে। এজন্য ‘ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের মেডিকেল যন্ত্রপাতি আধুনিকীকরণ ও বিশ্বমানে উন্নীতকর ‘ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৪৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ২৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার তহবিল থেকে ১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে বিশ্বমানের উন্নীত করার জন্য দু’টি অপারেশন থিয়েটার স্থাপন, দু’টি এনজিওগ্রাম মেশিন, একটি সিটি এনজিওগ্রাম মেশিন এবং একটি এমআরআই মেশিন ও অন্যান্য চিকিৎসা যন্ত্রপাতিসহ সার্জিকেল যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে। ফলে সব ধরনের হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, প্রস্তাবটি নিয়ে আগামী (৫ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা। সেখানে নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এটি বাস্তবায়ন করবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। সভায় প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে শেষ করার তাগিদ দেওয়া হবে বলে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানিয়েছেন।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ১৯৭৮ সালে ওপিডি কার্যক্রমসহ চালু হওয়ার পর ১৯৯৯ সালে ক্যাথ ল্যাব প্রসিডোর (রিং স্থাপন), ৩৫ হাজার ৮৬৫ জনের বাইপাস অপারেশন করা হয়। এছাড়া ২ লাখ ৮৯ হাজার ২২০ জন হৃদরোগীকে ওপিডি সার্ভিস দেওয়া হয়। এ হাসপাতালে বাইপাস অপারেশনে মৃত্যুর হার আন্তর্জাতিক মানে অর্থাৎ ২ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ। হাসপাতালের হার্ট সার্জারি রিং বসানো আন্তর্জাতিক মানের হলেও সর্বশেষ মডেলের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ধারা বজায় রাখার জন্য এই প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্প বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের মতামতে বলা হয়েছে,
এর আগে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে সরকারি অর্থে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে বা বাস্তবায়নাধীন। তাই বাস্তবায়িত প্রকল্পের ফলাফল ও সুপারিশ, আইএমইডির সমাপ্তি মূল্যায়ন প্রতিবেদনের সুপারিশ এবং প্রস্তাবিত প্রকল্পের সম্ভাব্য ফলাফলের তুলনামূলক চিত্র উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) দেওয়া যৌক্তিক হবে। প্রকল্পের আর্থিক ও অর্থনৈতিক আলোচনা করা হয়নি।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অর্থের বিনিময়ে বা স্বল্পমূল্যে বিভিন্ন সেবা দিচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে কার্ডিয়াক রোগীদের আরও উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
এছাড়া প্রকল্পের প্রস্তাবিত জনবলের (প্রকল্প পরিচালক-১, অতিরিক্ত পরিচালক-১, সহকারী প্রকৌশলী-১, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, কম্পিউটার অপারেটর-১, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা-১, এমএলএসএস-১ এবং ড্রাইভারসহ ৬ জন) বেতন বাবদ নিজস্ব অর্থায়নে ৫৭ লাখ টাকা এবং ভাতা (দায়িত্ব ও সম্মানি ভাতা) বাবদ ১৫ লাখ টাকা সংস্থান করা হয়। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের জনবল কমিটির অনুমোদন নেই। প্রচলিত বিধি অনুযায়ী অর্থের উৎস জনবল বাবদ সংস্থানের জন্য অর্থ বিভাগের সুপারিশ নেওয়া আবশ্যক। অন্যথায় জনবলের আর্থিক সংস্থানটি বাদ দিয়ে ডিপিপি পুনর্গঠন করা উচিত। সে বিষয়ে সভায় জানতে চাওয়া হবে।
সূত্র জানায়, রাজস্ব খাতের আওতায় দরপত্র আহ্বান, প্রচার ও বিজ্ঞাপন ব্যয় বাবদ ১৩ লাখ টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। এ ব্যয় বাদ দেওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হবে।
এছাড়া মেডিকেল ইকুইপমেন্ট খাতে ২ হাজার ৪২৯টি সেট যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম সেট সংগ্রহ বাবদ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) ৪৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে যন্ত্রপাতি সংগ্রহের জন্য ৬ সদস্য বিশিষ্ট যে ব্যয় প্রাক্কলন কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাতে কোনো বাইরের সদস্য নেই বরং তারা সবাই ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ইনহাউস কমিটি। নন-সিডিউল আইটেম হিসেবে প্রচলিত বিধি অনুসারে উদ্যোগী মন্ত্রণালয়ের একজন বাইরের সদস্যসহ গঠিত বাজার দর কমিটির মাধ্যমে এ খাতের পরিমাণ, স্পেসিফিকেশন, একক দর ও ব্যয়ের সামঞ্জস্য নিয়ে সভায় সুপারিশ করা হবে বলে জানা গেছে।
সারাবাংলা/জেজে/এমও
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট বিশ্বমানের যন্ত্রপাতি