Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রবাসী আয়ে ভাটা, ৫ মাসের মধ্যে কম রেমিট্যান্স আগস্টে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৫৫

প্রতীকী ছবি

ঢাকা : ডলার–সংকটের ধারাবাহিকতায় কমছে প্রবাসী আয়। রেমিট্যান্স বাড়াতে সরকার নানা পদক্ষেপ নি‌লেও আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। বরং ধারাবা‌হিকভাবে কম‌ছে প্রবাসী আয়। সদ্য বিদায়ী আগস্ট মাসে প্রবাসীরা ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলারে সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলর ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা ধরে) ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি ৪১ লাভ টাকা। এটি চলতি বছরের দ্বিতীয় সর্বোনিম্ন এবং ৫ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠায় ১৫৬ কোটি ডলার। যা চলতি বছরের সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, সদ্য বিদায়ী আগস্টে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৩ দশমিক ০৬ কোটি ডলার বা ২১ দশমিক ২১ শতাংশ কম। ২০২২ সালের আগস্টে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৩ কোটি ডলার। অন্যদিকে আগের মান জুলাইয়ে র তুলনায় আগস্টে রেমিট্যান্স কমেছে ৩৭.৩৬ কোটি ডলার। গত জুলাই মাসে প্রবাসীরা ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

জানা গেছে, সত্য বিদায়ী আগস্টে সরকারি মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮ কোটি ৩১ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৩ লাখ ডলার এবং বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।

সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৪ কোটি ডলারের কিছুটা বেশি। এ ছাড়া সোশ্যাল ইসালমী ব্যাংকের মাধ্যমে ১২ কোটি ৭৪ লাখ ডলার, ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৯২ লাখ ডলার, ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৪৪ লাখ ডলার এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

রেমিট্যান্স বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ : দেশে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে। পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া। রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করার পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন অর্থবছরভিত্তিক রেমিট্যান্স : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসীরা ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলার, ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান। এছাড়াও ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এক হাজার ৬৩১ কোটি ডলার ,২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

পঞ্জিকাবর্ষ হিসাবে রেমিট্যান্স : ২০২২ সালে প্রবাসীরা দুই হাজার ১২৭ কোটি ডলার বা ২১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর আগে ২০২১ সালে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ দুই হাজার ২০৭ কোটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে ২০২০ সালে দুই হাজার ১৭৪ কোটি ১৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ২০১৯ সালে এক হাজার ৮৩৩ কোটি মার্কিন ডলার,২০১৮ সালে এক হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, ২০১৭ সালে এক হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার, ২০১৬ সালে এক হাজার ৩৬১ কোটি ডলার এবং ২০১৫ সালে এক হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে।

সারাবাংলা/জিএস/একে

আগস্ট প্রবাসী আয় বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর