Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ইউনূসের পক্ষে চিঠি দেওয়া ব্যক্তিরা নীতিজ্ঞান বিবর্জিত’

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:১৬

ঢাকা: ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে চিঠি দেওয়া ১৬০ ব্যক্তিকে ‘নীতিজ্ঞান বিবর্জিত’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। তিনি মনে করেন, চিঠি পাঠানো ১৬০ ব্যক্তি অর্থের বিনিময়ে কোনো গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল বা সম্প্রদায় কিংবা কোনো ব্যক্তির হয়ে লবিস্টের কাজ করছেন।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে ১৬০ জন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন দাবি করে এই ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘এই ১৬০ জন ব্যক্তি যারা বিচার প্রক্রিয়াধীন একটি বিষয় নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন, তারা নীতিজ্ঞান বিবর্জিত মানুষ।’ তাদের এই বিবৃতির কারণে মানবতা লজ্জিত হয় বলেও মনে করেন ঢাবি উপাচার্য।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ধারণা তারা লবিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। সে কারণেই হয়তো তারা আজ দুর্নীতি ও অন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এটি কিন্তু তারা নিজের দেশে করতে পারতেন না।’

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ বলেন, ‘ইউনূসের বিরুদ্ধে ১৬৮টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে দু’টি ফৌজদারি মামলা। বাকিগুলো কর ফাঁকিসহ নানান মামলা। গ্রামীণ টেলিকমের মামলা রয়েছে ৬৪টি। গ্রামীণ কল্যাণের মামলা রয়েছে ৬৯টি, গ্রামীণ কমিউনিকেশন ২৫টি, গ্রামীণ ফিশারিজ আটটিসহ ১৬৮টি মামলা রয়েছে। এখন প্রশ্ন হল এই মামলাগুলো কে করেছে? এই মামলাগুলো করেছে তারাই যারা ড. ইউনূ‌সে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। সরকার তো তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা করেনি। তা হলে কী কারণে না জেনে, না বুঝে বিশ্ববরেণ্য ১৬০ ব্যক্তি বিবৃতি দিলেন?’

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক সামাদ বলেন, ‘১৯৯৮ সালের আগস্ট মাস থেকে ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত কিস্তি বাকি পড়ায় তিনি দরিদ্র মানুষদের বিরুদ্ধে ১৩ হাজার সা‌র্টিফি‌কেট মামলা করেছিলেন। সে সময় অনেক দরিদ্র মানুষ আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছেন। তিনি ১৩ হাজার মামলা করার পর বিবৃতি দিয়েছেন আইনের চোখে সবাই সমান। তাহলে তিনি কি আইনের চোখে সমান নন? আমাদের সংবিধানের ২৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভকারী। কাজেই ইউনূসের অনৈ‌তিক কাজকর্মের বিরুদ্ধে যারা মামলা দায়ের করেছেন তাদেরও আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার আছে।’

মানববন্ধনে ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, ‘দেশের শ্রম আইনে বলা হয়েছে, যে পরিমাণ নিট ইনকাম তার পাঁচ শতাংশ শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে দিতে হবে। সেই পাঁচ শতাংশ টাকা আগে দেওয়া হলো না কেন? মামলার পরে কেন দেওয়া হলো? নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, পুরস্কারের অর্থ তিনি গরিবদের জীবনমানের উন্নয়ন ও শিক্ষার জন্য ব্যয় করবেন। আমার প্রশ্ন হলো- কোন জায়গায় শিক্ষার জন্য তিনি ব্যয় করেছেন। তিনি গরিব মানুষের জন্য কি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছেন ওই টাকা দিয়ে? এমন কোনো নজির আমার জানা নেই।’

ড. ইউনূসের পক্ষে যারা বিবৃতি দিয়েছেন, তারা নিজেরা এই বিবৃতি পড়েছেন কি না সে বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক।

মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস ছামাদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিয়া রহমান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ও সাবেক প্রক্টর অধাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহাম্মদ প্রমুখ।

সারাবাংলা/আরআইআর/পিটিএম

ড. আখতারুজ্জামান ড. ইউনূস ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঢাবি উপাচার্য

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর