বিশ্বমত উপেক্ষা করে জেরুজালেমে খুলছে মার্কিন দূতাবাস
১৪ মে ২০১৮ ১৬:০২
।। সারবাংলা ডেস্ক ।।
মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের মিত্রদেশসহ বিশ্বমতকে উপেক্ষা করে জেরুজালেমে দূতাবাস উদ্বোধন করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইতোমধ্যে জেরুজালেমে পৌঁছেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প ও তার স্বামী জারেদ কুশনার।
ইসরায়েলের ৭০তম জন্মদিবসে সোমবার (১৪ মে) জেরুজালেমের মার্কিন কনস্যুলেটভবনের ভেতরে এই দূতাবাসের উদ্বোধন করা হবে।
মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অধিকাংশ দেশ এই অনুষ্ঠান বর্জন করেছে। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইতোমধ্যে আলবেনিয়া, অ্যাঙ্গলো, অস্ট্রিয়া, ক্যামেরুন, কঙ্গো, দি ডেমোক্রাটিক রিপাবলিক অব দি কঙ্গো, আইভরি কোস্ট, চেক রিপাবলিক, ডমিনিকান রিপাবলিক, এল সালভাদর, ইথিওপিয়া, জর্জিয়া, গুয়াতেমালা, হনডুরাস, হাঙ্গেরি, কেনিয়া, মেসিডোনিয়া, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, পানামা, পেরু, ফিলিপাইন্স, রোমানিয়া, রুয়ান্ডা, সার্বিয়া, দক্ষিণ সুদান, থাইল্যান্ড, ইউক্রেন, ভিয়েতনাম, প্যারাগুয়ে, তানজানিয়া এবং জাম্বিয়ার প্রতিনিধিরা এসে উপস্থিত হয়েছেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নয়ের্ত জেরুজালেমে অস্থায়ী দূতাবাসের কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন।
গত বছরের একেবারে শেষ দিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন এবং সেখানেই মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশনা দেন। এরপর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অশান্তি ও সহিংসতার জন্ম দেয়।
গাজা, বেথেলহেম, জেরুজালেম পশ্চিম তীরসহ বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সেই সংঘর্ষ এখনও চলছে। ট্রাম্পের ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত প্রায় শতাধিক ফিলিস্তিন প্রাণ হারিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ইভানকা ও জারেদের পাশপাশি মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি এমনুচিন এবং ডেপুটি স্টেট সেক্রেটারি জন সুলিভান উপস্থিত থাকবেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ান এই সিদ্ধান্তের শক্ত প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ইসরায়েল জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী হিসেবে দীর্ঘকাল দাবি করে আসলেও এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ছিল না। ফিলিস্তিনিরা শহরটির পূর্বাংশকে তাদের ভবিষ্যত রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে চেয়ে আসছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং প্রভাবশালী দেশগুলোও এতদিন ধরে পুরো জেরুজালেমে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা করে আসছিল। পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলের অবস্থানকে ‘দখলদার’ হিসেবেই দেখছিল তারা।
গত ডিসেম্বরে ট্রাম্পের ওই ঘোষণার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় আরব ও ইউরোপীয় মিত্ররা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে বলেও মন্তব্য করে তারা। তাৎক্ষণিক এক জরুরি সভায় মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি জেরুজালেমকে পাল্টা ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দিতে সারাবিশ্বের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলো। মার্কিন দূতাবাস সড়িয়ে নেয়ায় বড় ধরনের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা।
সারাবাংলা/এমআইএস