১৬টি বস্ত্রকল পিপিপি’র অধীনে চালু হচ্ছে: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৪৫
ঢাকা: বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের (বিটিএমসি) অধীন ২৫টি বস্ত্রকলের মধ্যে ১৬টি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
মন্ত্রী জানান, এরই মধ্যে একটি বস্ত্রকল হস্তান্তর করা হয়েছে, একটি বস্ত্রবল হস্তান্তরের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। আরও ছয়টি বস্ত্রকল পিপিপির আওতায় হস্তান্তর করতে কার্যক্রম চলছে। বাকি আটটি বস্ত্রকল পর্যায়ক্রমে পিপিপিতে হস্তান্তর করা হবে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে ঢাকা-৭ আসনের সরকারি দলের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব তথ্য দেন।
জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, বিটিএমসির অধীন বস্ত্রকলগুলোর যন্ত্রপাতি ৫০ থেকে ৬০ বছরের পুরনো প্রযুক্তিনির্ভর। এগুলোর মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্যের পক্ষে গুণগত মানে আধুনিক বেসরকারি মিলে উৎপাদিত পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়াও বাজারে বিদেশি সুতার উপস্থিতি, বিশ্ব আর্থিক মন্দা, বিটিএমসির আর্থিক অস্বচ্ছলতা, ব্যাংক ঋণ ইত্যাদির কারণে অধিকাংশ মিলের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন- দেশে চাহিদার তুলনায় বস্ত্রের ঘাটতি নেই: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করে বিটিএমসির অধীন বন্ধ মিলগুলো চালুর নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ওই নির্দেশনার আলোকে পিপিপির মাধ্যমে মিলগুলো চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে ১৬টি বস্ত্রকল পিপিপির আওতায় পরিচালনায় নীতিগত অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। সে অনুযায়ী গাজীপুর টঙ্গীর কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলস পিপিপির আওতায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ঢাকার ডেমার আহমেদ বাওয়ানী টেক্সটাইল মিলস হস্তান্তরের জন্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।
সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের আরেক প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, বস্ত্র খাতে দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে বস্ত্র অধিদপ্তরের মাধ্যমে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। টেক্সটাইল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সময়োপযোগী নতুন নতুন কোর্স চালু করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সোনালি ঐতিহ্য মসলিনের সুতা তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বস্ত্ৰ আইন ২০১৮ অনুযায়ী বস্ত্র অধিদপ্তর হচ্ছে বস্ত্র খাতের পোষক কর্তৃপক্ষ। পোষক কর্তৃপক্ষ হিসেবে বস্ত্র অধিদপ্তর বস্ত্র শিল্পের নিবন্ধন দিচ্ছে। পোষকের কাজের শুরু থেকে এ বছরের জুলাই পর্যন্ত দুই হাজার ১৯০টি স্থানীয় ও বিদেশি বস্ত্র শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হয়েছে। ফলে এ শিল্পের সম্প্রসারণ ও বিপণন বেড়েছে।
বস্ত্র অধিদপ্তরের অধীন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বছরে গড়ে ৪১৬ জন নির্বাহী পর্যায়ের বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার, ৩৬১ জন মধ্যম পর্যায়ের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এবং এসএসসি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট থেকে উত্তীর্ণ তিন হাজার ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন দেশি-বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত হয়ে বস্ত্র খাতে অবদান রাখছে। বস্ত্র খাতের উন্নয়নের জন্য বস্ত্র অধিদপ্তরে ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে।
মসলিন কাপড়ে সাফল্যের তথ্য জানিয়ে বস্ত্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সোনালি ঐতিহ্য মসলিনের সুতা তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের আওতায় ব্যাপক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে মসলিনের সুতা ও কাপড় তৈরির প্রযুক্তি পুনরুদ্ধার এবং মসলিন কাপড় তৈরির উপযোগী ফুটি কার্পাস তুলার জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডকে ঢাকাই মসলিনের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে। মসলিন সুতা থৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধারের কারণে ২০২১ সালে বস্ত্র অধিদপ্তরকে জনপ্রশাসন পদকে ভূষিত করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর
গোলাম দস্তগীর গাজী বস্ত্র অধিদপ্তর বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বস্ত্রকল বিটিএমসি সংসদ অধিবেশন সংসদে প্রশ্নোত্তর