‘ডেপুটি অ্যাটর্নি এমরান কাউকে খুশি করতে বক্তব্য দিয়েছেন’
৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৩৮
ঢাকা: ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া কাউকে খুশি করার জন্য এবং অন্য কোনো উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে ড. ইউনূসের বিচার নিয়ে ১৬০ বিশ্ব নেতার খোলা চিঠির বিপরীতে বিবৃতির বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ বক্তব্যের প্রসঙ্গে এমন কথা বলেন তিনি।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্য প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিশ্চিতভাবেই তিনি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল) কোনো উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত হয়ে এমন কথা বলেছেন।’
ডেপুটি অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আমি ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ না, কারণ আমি ওনার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ না।’
তিনি আরও বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি কোনো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ পরিচালনা করি না। অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকেও এমন কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।’
এর আগে, গতকাল (৪ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের কাছে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, ‘ড. ইউনূসের পক্ষে ১০৭ জন নোবেলজয়ীসহ ১৬০ জন বিদেশি ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটনও রয়েছেন। ওই বিবৃতির বিরুদ্ধে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাকে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছে। কিন্তু আমি ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘রোববার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানানো হয়। যেখানে সোমবার বিকেল ৪টার মধ্যে বিবৃতি স্বাক্ষর করার কথা বলা হয়। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে স্বাক্ষর করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি স্বাক্ষর করার বিষয়ে একমত নই। আমি মনে করি ড. ইউনুসের বিষয়ে যে বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে সেটির প্রয়োজন নেই। আর আমি মনে করি ওনার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো চলছে তা অন্যভাবে ডিল করা যেত। এটা এক প্রকারে ওনাকে প্রেশারে রাখার জন্যই করা হচ্ছে বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। উনি বাংলাদেশের জন্যই যে শুধু সম্মান বয়ে এনেছেন তা কিন্তু নয়, উনি সারা পৃথিবীর জন্য সম্পদ।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ড. ইউনূস একজন সম্মানি ব্যক্তি, তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি।’
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করা এবং বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গত মাসে খোলা চিঠি দিয়েছেন ১৬০ বিশ্বনেতা।
পরে ওই চিঠির বিষয়ে বাংলাদেশের ১৭১ জন বিশিষ্ট নাগরিক, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী এক বিবৃতিতে বলেন— ওই খোলা চিঠির বক্তব্য বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর স্পষ্ট হুমকি হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে আমরা বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার ওপর এ ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
বিদেশিদের লেখা ওই খোলা চিঠির প্রতিবাদ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দেশের ৫০টি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকগণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ ও ১৩টি জাতীয়ভিত্তিক সাংস্কৃতিক ফেডারেশন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে