জ্বালানি-স্বাস্থ্য খাতে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়া
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৩
আশিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন দেশটিতে সফররত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। বৈঠকে ঢাকা ও জাকার্তা জ্বালানি, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছে।
বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এর আগে বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া জ্বালানি ও স্বাস্থ্য খাতে তিনটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে। এতে দুই দেশের কল্যাণে কাজ করতে ব্যাপক সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলন ও ১৮তম ‘ইস্ট এশিয়া সামিটে’ অংশ নিতে ইন্দোনেশিয়া সফরে রয়েছেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। গতকাল মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে (জেসিসি) আসিয়ান সম্মেলন শুরু হয়েছে। তিন দিনের সম্মেলন শেষ হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর)।
সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়া রাষ্ট্রপতি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপধানকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানান। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে চমৎকার আতিথেয়তা দেয়ার জন্য তিনি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের উন্নয়ন, বিশেষ করে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ ধারণার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন আর্থসামাজিক খাতে ব্যাপক উন্নয়নের কথাও উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ, সিরামিক ও তৈরি পোশাক (আরএমজি) পণ্য আমদানি করতে পারে। গত এক দশক ধরে বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের ধারাবাহিকতার কারণে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতির উদ্ধৃতি দিয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘দুই দেশের চিকিৎসকদের সনদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি পারস্পরিক সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বৈঠকে বলেন, বাংলাদেশ এক শটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড), ৩৯টি হাই-টেক পার্ক ও অন্যান্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। ইন্দোনেশিয়া আগ্রহী হলে বাংলাদেশ খুশি হয়ে তাদের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থান নির্ধারণ করবে।
বিনিয়োগের সুযোগ পেতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতার ওপর জোর দেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশে যে বিশাল সুযোগ রয়েছে, তা কাজে লাগাতে উৎসাহিত করেন।
শিগগিরই ঢাকা ও জাকার্তা বা বালির মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপন করা হবে এবং দুই দেশের সমুদ্র বন্দরের মধ্যে শিপিং চালুর সুযোগ তৈরি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ইন্দোনেশিয়ার সরকার ও জনগণের কাছ থেকে সর্বাত্মক সহায়তা কামনা করেন তিনি।
বৈঠকে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, আসিয়ান সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আসিয়ান চেয়ার ও আসিয়ান সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারের সদস্যপদ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের কাছ থেকে আরও সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু সরকারের সময়ে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়াই বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। বাসস।
সারাবাংলা/টিআর
আসিয়াস সম্মেলন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বাংলাদেশ-ইন্দোনেশিয়া রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন