আগস্টে সড়কে ৪২৬ প্রাণহানি, ৪০ শতাংশে জড়িত মোটরসাইকেল
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:১৮
ঢাকা: আগস্ট মাসে দেশে ৪৪১টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪২৬ জন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৭৯৩ জন। এর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা ১৭১টি। এসব দুর্ঘটনায় ১৬৮ জন নিহত ও ১৪৯ জন আহত হয়েছেন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা মোট নিহতের ৩৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
বুধবার আগস্ট মাসের সড়ক দুর্ঘটনার এ পরিসংখ্যান দিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংগঠনটি। মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুর্ঘটনার প্রতিবেদন গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যান তুলে ধরে যাত্রী কল্যাণ সমিতি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ঢাকা বিভাগে, সবচেয়ে কম সিলেটে। এর সধ্যে ঢাকা বিভাগে ১২৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২৬ জন নিহত ও ১৫৪ জন আহত হয়েছেন। আরসিলেট বিভাগে ২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত ও ৬৯ জন আহত হয়েছেন।
আগস্ট মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় যেসব যানবাহন জড়িত ছিল তার মধ্যে ৬৩৫টির পরিচয় পেয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। তাদের প্রতিবেদন বলছে, এসব যানবাহনের ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ মোটরসাইকেল; ২২ দশমিক ২০ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ড ভ্যান ও লরি; ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ বাস; ১৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক; ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা; ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ নছিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা, ট্রাক্টর ও লেগুনা; এবং ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ কার, জিপ ও মাইক্রোবাস।
প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দুর্ঘটনাই ঘটেছে গাড়িচাপা দেওয়ার কারণে। এ ধরনের দুর্ঘটনার সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে ৬১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এ ছাড়া ২১ দশমিক ৯৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া, ২ দশমিক ৭২ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকার তথ্যও তুলে ধরেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। তাদের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, আগস্ট মাসের মোট দুর্ঘটনার সর্বোচ্চ ৩৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে। এ ছাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং ফিডার রোডে ৩১ দশমিক ০৬ শতাংশ দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ১৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।
সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের অবাধে চলাচলকে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়া সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং ও সড়কে বাতি না থাকা, মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি ও ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা, উল্টো পথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিংয়ে দায়িত্বরত ব্যক্তির গাফিলতি, ফিডার রোড এবং আঞ্চলিক রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা ইত্যাদিকে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সারাবাংলা/টিআর