স্বামীর ছোড়া গরম পানিতে ঝলসে গেছে স্ত্রীর শরীর

জয়পুরহাট: জেলার কালাই উপজেলায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামীর ছোড়া গরম পানিতে ঝলসে গেছেন এক গৃহবধূর শরীর। আহত সুরাইয়া আক্তারের (২২) অবস্থা খারাপ হওয়ার শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াসিম আল বারি এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার তালোড়া বাইগুনি গ্রামে গৃহবধূর স্বামী সুমন মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। সুরাইয়া একই গ্রামে ভ্যান চালক আসমান ফকিরের মেয়ে।

তাকে রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্বজনরা কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। তবে চিকিৎসকরা তার শরীরের অবস্থা বেগতিক বুঝে শুক্রবার দুপুরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনরা জানান, প্রেম করলেও উভয় পরিবারের সম্মতিতে এক বছর আগে ২০২২ সালে সুরাইয়ার সঙ্গে সুমন মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে সুমনকে ১ লাখ টাকা, এক ভরি সোনা ও বেশ কিছু আসবাবপত্র দেয় সুমাইয়ার পরিবার। বিয়ের পর থেকে সুরাইয়ার কাছে আরও যৌতুকের টাকা দাবি করেন স্বামী। ছয় মাস আগেও সুরাইয়া তার বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা এনে দেন। সুমন কোনো কাজ করে না, সব সময় বন্ধুদের সঙ্গে তাস খেলে ও আড্ডা দেয়। দুই মাস আগেও সুরাইয়ার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন সুমন। ওই টাকা দিতে না পারায় সুরাইয়াকে মারপিট করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। সে ঘটনায় থানায় দরবার-সালিশের পর সুরাইয়া তার স্বামীর বাড়িতে যায়। এরপর থেকে সুমন অনবরত সুরাইয়াকে তার বাবার নিকট টাকা নিয়ে আসতে ভয়ভীতি ও মারপিট করে আসছেন।

এর এক পর্যায়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে ভাত রান্না করছিলেন সুরাইয়া। এ সময় স্বামী সুমন টাকা নিয়ে আসছো কি না জিজ্ঞেস করলে সুরাইয়া অপারগতার কথা জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুরাইয়ার শরীরে ভাতের পাতিলের গরম পানি ছুড়ে মারেন সুমন। এতে তার দুই পা, পিঠ ও দুই হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। খবর পেয়ে সুরাইয়ার বাবা-মা ঘটনাস্থলে এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন বলে জানান তারা।

এ অভিযোগের বিষয়ে সুমন মিয়া বলেন, ‘রাগের মাথায় আমি স্ত্রীর গায়ে গরম পানি ছুড়ে মেরেছি। তবে হত্যার উদ্দেশ্যে করেননি।’

কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াসিম আল বারি বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে অবগত আছি। তবে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বা মামলা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/এসকে/এনএস

জয়পুরহাট