Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩ ঘোষণায় পর্দা নামল আঞ্চলিক জলবায়ু সম্মেলনের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০০:২৯

আঞ্চলিক জলবায়ু সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠান। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: জলবায়ু সম্পর্কিত সমস্যা নিরসনে ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করা, জলবায়ুর অভিঘাত থেকে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিকে সুরক্ষায় সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য পূরণে ‘এক সূর্য এক বিশ্ব এক গ্রিড’ উপলব্ধি— এই তিন ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে আঞ্চলিক জলবায়ু সম্মেলন-২০২৩।

সম্মেলনে নানা সেশনে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি রোধে আঞ্চলিক সহায়তা বাড়ানোর উপায় ও জলবায়ু ক্ষতিপূরণসহ নানা দিক উঠে এসেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সংসদ সদস্যসহ নীতিনির্ধারক, উন্নয়ন সহযোগী, গবেষকদের অংশগ্রহণে তিন দিনের এই আঞ্চলিক সম্মেলনের পর্দা নেমেছে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর)।

বিজ্ঞাপন

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, এই ধরনের আলোচনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা ও পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় হয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো আগামীতেও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

সমাপনী অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক ও জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব কান্নি উইগনারাজা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। ইউএনডিপি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পাশে সবসময় আছে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সবার জন্য টেকসই ভবিষ্যত গড়ে তোলা সম্ভব।

সমাপনী অনুষ্ঠানে অ্যাম্বাসেডর রিফ্লেকশনে বিশেষ বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব কো-অপারেশন থিজস ওয়ডস্ট্রা, ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার ও ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মার্ট ক্যানেল এবং সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব কো-অপারেশন করিন হেনচোজ পিগনানি।

বিজ্ঞাপন

নোট অব থ্যাংকস জানান ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের চেয়ারপারসন তানভির শাকিল জয়। সমাপনী বক্তব্য দেন ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী।

তিনটি ঘোষণার মাধ্যমে এ সম্মেলনের সমাপ্তি হয়েছে। প্রথম ঘোষণায় বলা হয়েছে— জলবায়ুর পরিবর্তন সরাসরি অর্থনীতি ও বাস্তুতন্ত্রকে প্রভাবিত করেছে, যা জরুরি নির্মূলে পদক্ষেপ প্রয়োজন। ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত সমস্যাগুলো সমাধান করতে দেশগুলো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

দ্বিতীয় ঘোষণায় বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি বার্ষিক ৯ শতাংশ হারে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। আবহাওয়ার চরম বিপর্যয়ে এর পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। তাই এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য দরকার সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ।

তৃতীয় ও শেষ ঘোষণায় বলা হয়, প্যারিস চুক্তি এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় মহাসাগর ও বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্ব ও বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে যে বিরূপ পরিণতি হবে তার গুরুত্বও সবাই অনুধাবন করি। দক্ষিণ এশিয়ার এই অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বন্যা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধি ও মহাসাগরের অম্লতা বেড়ে যাওয়ার ফলে স্থিতিস্থাপকতা এবং অভিযোজন জলবায়ু-আক্রান্ত দেশগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিই। তাই প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য পূরণ করতে সবাইকে সক্ষম করার মাধ্যমে এক সূর্য এক বিশ্ব এক গ্রিড উপলব্ধি করি।

এর আগে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) শুরু হয় এই আঞ্চলিক সম্মেলন। সম্মেলনে চারটি থিমেটিক সেগমেন্ট ও ১৯টি সেশনে আলোচক প্যানেলিস্ট ছিলেন ১২০ জন গবেষক, সাংসদ ও নীতিনির্ধারক। ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ, দ্য আর্থ সোসাইটি, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) ও ক্লাইমেট পার্লামেন্ট যৌথভাবে এই সম্মেলন আয়োজন করে।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

আঞ্চলিক জলবায়ু সম্মেলন জলবায়ু সম্মেলন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর