পাবলিক মানি বেড়ে যাওয়ায় দুর্নীতির বেড়েছে: পরিকল্পনামন্ত্রী
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:১৩
ঢাকা: বিভিন্ন খাতেই আগের তুলনায় দুর্নীতি বেড়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এর পেছনে তিনি সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে আগের তুলনায় বেশি অর্থ খরচ হওয়াকে কারণ হিসেবে দেখছেন।
মন্ত্রী বলেন, আপনাদের (সংসদ সদস্য) সঙ্গে আমিও একমত। সারাদেশের সব খানে অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাত্রা আগের তুলনায় আনুপাতিক হারে বেড়েছে। যে পরিমাণ পাবলিক মানি ৩০-৪০ বছর আগে ব্যয় হতো, তার তুলনায় দুই, তিন, চার গুণ বেশি খরচ হচ্ছে। আমি বলব, এর ফলে চুরির সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। এটি জাতীয় সমস্যা। আইন-কানুন পাস করে, বর্তমান প্রযুক্তি ব্যবহার করে, জনমত তৈরি করে, জনগণের কাছে স্বচ্ছতা তুলে ধরে প্রচার করলে এর পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমে আসবে।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি বিল-২০২৩ পাসের আলোচনায় দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের পর পরিকল্পনামন্ত্রী তার বক্তব্যে এ কথা বলেন। এর আগে বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরাম ও জাতীয় পার্টির একাধিক সংসদ সদস্য বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ করেন।
এম এ মান্নান বলেন, হাজার হাজার লাখ লাখ কোটি টাকার প্রকল্প আমার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাস হয়ে যায়। এগুলোর জন্য এক সময় ক্রয়ে যেতে হয়। অতীতের যে সিপিটিইউ ছিল, সেটি বর্তমান সময়ে ভলিউমের সঙ্গে সক্ষমতা দেখাতে পারছে না। তাদের জনবল, যন্ত্রপাতির অভাব, অনেক ক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতার অভাব। সেই সমস্যার সমাধানে বিলটা আনা হয়েছে ।
মন্ত্রী বলেন, কোনো টেন্ডার আমি মন্ত্রী বা সিপিটিইউ ডিজি পাস করতে পারি না। কয়েকটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাছাই করে চূড়ান্ত হয়। এরপরও যদি সংশয় থাকে, তবু আমাদের একটানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
এর আগে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, এখন টেন্ডারবাজি বন্ধ হয়েছে। কিন্তু তাতে রাষ্ট্রের কোনো লাভ হয়নি। এক শ্রেণির আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ বর্তমান টেন্ডার ব্যবস্থাকে নিরাপদ মনে করে এবং এর আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। পর্দা কেনা, বালিশ কেনা— এরকম ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে।
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, এ আইনের মূল উদ্দেশ্য ছিল টেন্ডারবাজি বন্ধ করা। এতে কিছু ভালো হয়েছে, কিছু খারাপও হয়েছে। আগে ১০ শতাংশ, ২০ শতাংশ দুর্নীতি হতো। আর এখন ১০ শতাংশ, ২০ শতাংশ কাজ হয়। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প, মেগা প্রকল্প তার (পরিকল্পনা মন্ত্রী) কাছ থেকে যায়। তখন তিনি যদি আটকাতে পারতেন, তাহলে দেশের অর্থনীতি ভালো থাকত, আমাদের কাছে অনেক টাকা থাকত।
এদিকে পাস হওয়া বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি বিল-২০২৩-এ বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) বিলুপ্ত হবে। বিপিপিএর ১৭ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। তবে সরকার চাইলে সদস্যসংখ্যা বাড়াতে কমাতে পারবে।
বিলে বলা হয়েছে, পরিকল্পনামন্ত্রী হবেন এই কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। আর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ কাউকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ করবে সরকার। এই কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকবে। বিপিপিএ তার কাজ সম্পাদনের জন্য যেকোনো ব্যক্তি বা সংস্থার জন্য চুক্তি সম্পাদন করতে পারবে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর