‘বাংলাদেশ-ফ্রান্স সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হবে’
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০২:২৩
অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে পৌঁছাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ইন্দো-প্যাসিফিক এবং এর বাইরেও সবার অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য কৌশলগত সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যেতে পারে বলে আমি আত্মবিশ্বাসী। তারা কৌশলগত সম্পদ ও উন্নত প্রযুক্তিতে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র খুলে দিচ্ছে।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানী ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোর সম্মানে আয়োজিত ভোজসভায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এদিন রাত ৮টার কিছু পরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন ম্যাক্রো।
আরও পড়ুন- আমড়ার শরবতে স্বাগত, ইলিশ-কাচ্চিতে আপ্যায়ন ম্যাক্রোকে
ভোজসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের একাধিক সংকট মোকাবিলায় আমাদের অংশীদারিত্ব একটি অর্থবহ শক্তি হতে পারে।
ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ফ্রান্স বাংলাদেশের বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী। আমরা দায়িত্বশীল ব্যবসা পরিচালনার দিকে আলোকপাত করে একটি শক্তিশালী বাণিজ্য অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছি।
ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনে যোগদান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে দ্বিপাক্ষিক সফরে রোববার রাতে ঢাকায় এসেছেন ম্যাক্রো। তাকে আতিথ্য দিতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত ও সম্মানিত বোধ করছেন বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। বলেন, আমি ২০২১ সালের নভেম্বরে এলিসি প্যালেসে আপনার উষ্ণ আতিথেয়তার কথা স্মরণ করছি। আমি আনন্দিত যে আপনি আমার ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্টকে দেশীয় বিভিন্ন খাবারে আপ্যায়ন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উভয় জাতিই রন্ধনপ্রণালী, সংস্কৃতি ও ভাষাগত ঐতিহ্যের জন্য অত্যন্ত গর্বিত। আমাদের দুই জনগোষ্ঠীকে একে অন্যের কাছাকাছি আনতে সাংস্কৃতিক বিনিময় ঘটাতে হবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিদেশি কায়দায় ‘টোস্ট’ করার জন্য আমড়ার শরবতকে বেছে নেন ওয়েলকাম ড্রিংক হিসেবে। ম্যাক্রোর জন্য বাংলাদেশের অদ্বিতীয় জনপ্রিয় খাবার কাচ্চি বিরিয়ানির ব্যবস্থা করেছেন বলেও জানান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফরাসি বিপ্লবের চেতনায় গভীরভাবে অনুপ্রাণিত ছিলেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু তার আত্মনিয়ন্ত্রণের সংগ্রামে স্বাধীনতা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের মূল্যবোধের প্রসারে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বাধীনতার আহ্বান আন্দ্রে মারলোর মতো বিশ্ব বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল, যারা আমাদের উদ্দেশ্য সাধনে লড়াই করার জন্য অনেক তরুণকে সংগঠিত করেছিলেন। আমার প্রায়ই মনে হয়, প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো তার ফরওয়ার্ড মার্চ আন্দোলনের মাধ্যমে মারলো ও তার অনুসারীদের গর্বিত উত্তরাধিকার বহন করছেন।
আরও পড়ুন- ঢাকায় ম্যাক্রো, বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনা
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ফ্রান্সে আপনি যে সাহসী সংস্কার করেছেন তার জন্য আমরা আপনাকে সাধুবাদ জানাই। আমরা আপনাকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বিশুদ্ধ বাতাসের নিঃশ্বাস হিসাবে দেখি। কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের জন্য আপনার (ফরাসি প্রেসিডেন্ট) গুরুত্ব আরোপ মূলত আমাদের পররাষ্ট্রনীতির নীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ভোজসভায় পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুলের তোড়া দিয়ে ম্যাক্রোকে স্বাগত জানান। এ সময় জাতির পিতার ছোট কন্য ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।
পিঁয়াজুসহ ভাপা ইলিশ ও সমুচা, স্যুপ, রুটি এবং মাখন দিয়ে ম্যাক্রোকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়। খাবারের তালিকায় আরও ছিল খাসির মাংসের কাচ্চি বিরিয়ানি, গরুর কাবাব, মুরগির কোর্মা, রোস্টেড লবস্টার, বেগুনের টক তরকারি ও ঐতিহ্যবাহী লুচি। শেষ পাতে ছিল পাটি সাপটা পিঠা, মিষ্টি দই, রসগোল্লা, তাজা ফল, পানীয় এবং বিভিন্ন ধরনের জুস ও কোমল পানীয়। আরও ছিল চা ও কফি। বাসস।
ছবি: পিআইডি
সারাবাংলা/টিআর
এমানুয়েল ম্যাঁক্রো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ-ফ্রান্স সম্পর্ক ম্যাক্রোর ঢাকা সফর ম্যাক্রোর বাংলাদেশ সফর