চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের রাউজান থেকে অপহরণের ১৪ দিন পর রাঙ্গামাটির গহীন অরণ্যে এক এক কলেজছাত্রের গলিত লাশ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ীই ওই কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত শিবলী সাদিক হৃদয় (২০) রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়া গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শফিক ড্রাইভারের ছেলে। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার গভীর অরণ্যে তার লাশ পাওয়া যায়।
হৃদয় কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়ন করত। পড়ালেখার পাশাপাশি সে বাড়ির পাশে যৌথ মালিকাধীন একটি মুরগির খামারে চাকরি করত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ আগস্ট রাতে রাউজানের কদলপুর ইউনিয়নের একটি মুরগির খামার থেকে নিখোঁজ হয় হৃদয়। পরদিন ২৯ আগস্ট রাউজান থানায় সাধারণ ডায়েরি (ডিজি) করেন খামারের মালিক কদলপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সাইফুল হক চৌধুরী।
পরে জানা যায়, পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সংঘবদ্ধ একটি চক্র হৃদয়কে অপহরণ করেছে। অপহরণের পরদিন চক্রটি হৃদয়ের বাবার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। হৃদয়ের বাবা ছেলেকে উদ্ধারে অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ছেলেকে মুক্ত করার বিষয়ে রাজি করান।
পুলিশ ও পরিবার জানায়, গত ৩১ আগস্ট অপহরণকারীরা হৃদয়ের বাবার কাছ থেকে নগদ দুই লাখ টাকা নেয়। এরপর হৃদয়কে ট্যাক্সি স্টেশন থেকে নিয়ে যেতে বলে। তবে হৃদয়ের বাবা ট্যাক্সি স্টেশনে গিয়ে ছেলের খোঁজ পাননি। পরে আবারও অপহরণকারীদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করলে তারা তাকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ঘুরাতে থাকে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাউজান থানায় অপহরণ মামলা করেন হৃদয়ের মা নাহিদা আকতার।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর থেকেই ওই ছেলের সন্ধানে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাই। পরে এ ঘটনায় জড়িত বলে নিশ্চিত হয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা হৃদয়কে হত্যার তথ্য স্বীকার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গভীর অরণ্য থেকে হৃদয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।’
‘পরিবারের সদস্যরা পরনের প্যান্ট ও বেল্ট দেখে হৃদয়ের লাশ শনাক্ত করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা হবে,’- বলেন ওসি আব্দুল্লাহ আল হারুন।