নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির অপেক্ষায়
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:৩৬
ঢাকা: নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। শিগগিরই এ নিয়ে নেপাল ও ভারতের সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তির উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি জানিয়েছেন, এরই মধ্যে এ প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি পেলেই চুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হবে।
নেপাল থেকে যে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশ আমদানি করতে যাচ্ছে, সে বিদ্যুৎ দেশে আসবে ভারতের ওপর দিয়ে, ভারতীয় সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে। এ নিয়ে বহুদিন ধরেই আলোচনা চলছে। গত রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) এ নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক হয়। সেখানেই বিদ্যুৎ আমদানিতে ত্রিপক্ষিক চুক্তি সইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি বিদ্যুতের ইউনিটের মূল্য নির্ধারণ করার কথাও বলা হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে হলে ইউনিট প্রতি কত খরচ হবে, তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, বিদ্যুতের ইউনিট হয়তো সাত টাকার মতো খরচ পড়বে। তবে মূল চুক্তির জন্য এখনো অনেক প্রক্রিয়া বাকি। সেসব পর্যায়ক্রমে শেষ করা হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ মনে করছে, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা গেলে দুই দেশই এ খাতে লাভবান হবে। এর ব্যাখা দিতে গিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ওই কর্মকর্তা বলেন, শীতে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে। নেপালে তখন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তি থাকে। চুক্তি হলে এর আওতায় বাংলাদেশ যেমন নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করবে, তেমনি বাংলাদেশও নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানির সুযোগ পাবে।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী সারাবাংলাকে বলেন, নেপাল থেকে আমরা ইমিডিয়েট ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করব। অর্থ বিভাগে এ সংক্রান্ত একটি বিশেষ কমিটি রয়েছে। আমরা ওই কমিটির অনুমোদন পেয়ে গেছি। আমাদের ভেড়ামারাতে যে ঘাটতি আছে, এই বিদ্যুৎ সেই ঘাটতি পূরণ হবে।
নসরুল হামিদ আরও বলেন, এক ট্রান্সমিশন দিয়ে বিদ্যুৎ নিয়ে আসতে পারব। বিদ্যুৎ আনার জন্য যে চুক্তি সই করব, সে বিষয়ে প্রক্রিয়া চলমান। নেপালে আমরা যে বিষয়গুলো চিহ্নিত করেছি, সেখানে ট্রান্সমিশনের বিষয়টি ছিল। বিদ্যুৎ আনার এই বিষয়ে ভারতের সচিব পর্যায়ে বৈঠকও হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই চুক্তিতে যেতে পারব।
নেপাল মূলত জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করে, যা দামের দিক থেকে তুলনামূলকভাবে কম। নেপাল থেকে এ বিদ্যুৎ আমদানির জন্য গত মে মাসে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, নেপালের ত্রিশুলি প্রকল্প থেকে ২৪ মেগাওয়াট এবং অন্য একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৬ মেগাওয়াটসহ মোট ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশ আমদানি করবে।
চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের ভেড়ামারায় জাতীয় গ্রিডে এই বিদ্যুৎ আসবে ভারতের বহরমপুর সঞ্চালন লাইন দিয়ে। এই বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর হলেও নেপালের পক্ষ থেকে ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর
নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ আমদানি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বিদ্যুৎ বিভাগ