লাম্পি স্কিনে মারা যাচ্ছে গরু, ‘জানে না’ প্রাণিসম্পদ অফিস
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:২৪
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: শিবগঞ্জে মশা ও মাছিবাহিত লাম্পি স্কিন রোগে প্রায় দেড় হাজার গরু আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক গরু মারাও যাচ্ছে। এতে শিবগঞ্জের শত শত গরু খামারি ও সাধারণ চাষি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তবে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস এবং প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, এ বিষয়ে তাদের কাছে সঠিক কোনো তথ্য নেই। এছাড়া স্থানীয় পশু চিকিৎসদের কাছেও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনেক গরু খামারি ও গরু পালনকারী জানান, গ্রাম্য পশু চিকিৎসরা ওষুধের দাম অনেক বেশি নিচ্ছে। শিবগঞ্জ প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে খামারি ও চাষিরা আক্রান্ত গরু নিয়ে ভিড় করলেও সেখানেও চিকিৎসাসেবা মিলছে না বলে অভিযোগ তাদের।
সূত্রমতে, গত বছরের চেয়ে এ বছর লাম্পি স্কিন রোগে অনেক বেশি গরু আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারাও যাচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে, গরু মারা যাওয়ার সংখ্যা কম হলেও সরজমিনে ঘুরে জানা গেছে এ বছর শিবগঞ্জে প্রায় দেড় হাজার গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এরইমধ্যে মারা গেছে প্রায় শতাধিক।
তবে প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গরু মারা যাওয়ার কোনো তথ্য দিতে পারছেন না। তাদের ভাষ্য, এ ব্যাপারে জরিপ না করায় সঠিক কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।
সম্প্রতি মনাকষা ইউনিয়নের পারচৌকা গ্রামের নুহ আলির প্রায় ৮০ হাজার টাকা দামের একটি, রুহুল আমিনের এক লাখ টাকা মূল্যের একটি, মোখলেসুর রহমানের এক লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের একটি, বিদোপুর ইউনিয়নের কবিরাজ টোলার অসিমের এক লাখ টাকা মূল্যের একটি গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
এ রোগে সবচেয়ে বেশি গরু আক্রান্ত হয়েছে ও মারা গেছে দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নের পশু চিকিৎসক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নে প্রায় ১০০ গরু আক্রান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নে কামালপুর গ্রামের বদিউরের একটি, মির্জাপুর গ্রামের রাকিবের একটি, ইংলিশ গ্রামের মফিজ উদ্দিনের একটি, মির্জাপুর গ্রামের আতাউর রহমানের একটিসহ প্রায় ৪০টি গরু মারা গেছে।
পশু চিকিৎসক মোয়াজ্জেম আরও বলেন, ‘এ রোগ থেকে গরু রক্ষা করতে আক্রান্ত গরুকে অন্য গরু থেকে আলাদা রাখতে হবে। নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হবে। বর্তমানে প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল থেকে ২০০ টাকা মূল্যের ‘গোটফস’ নামে একটি ভ্যাকসিন দিচ্ছে। যা ব্যবহারে অনেক গরু ভালো হচ্ছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রাম্য পশু চিকিৎসক জানান, এ রোগটি মশা ও মাছিবাহিত রোগ। এ রোগের লক্ষণ হলো গরুর শরীরে গুটি গুটি আকারে ফোসকা উঠবে। জ্বর হবে। খাওয়া ছেড়ে দিয়ে গরু আস্তে আস্তে মারা যাবে। বর্তমানে প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ঠিকমত ভ্যাকসিন সরবরাহ না দেওয়ায় খামারি ও সাধারণ চাষিরা হিমশিম খাচ্ছেন।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. শাহাদাৎ হোসেন জানান, শিবগঞ্জে লাম্পি স্কিন রোগে কোনো গরু মারা গেছে কিনা তা আমার জানা নেই। কারণ এখনো জরিপ করা হয়নি, তবে এ রোগ থেকে গরুকে রক্ষা করতে নিয়মিত ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, যদি কেউ ওষুধের দাম বেশি নেয় এবং অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/এমও