ইন্দোনেশিয়া-সিঙ্গাপুর সফর শেষে দেশে ফিরলেন রাষ্ট্রপতি
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:২৯
ঢাকা: ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরে ১৩ দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে তিনি বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে (বিজি-৫৮৫) ঢাকায় অবতরণ করেন। উড়োজাহাজটি সিঙ্গাপুর সময় বিকেল ৪টা ২২ মিনিটে চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
এর আগে, রাষ্ট্রপতি ৮ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে সিঙ্গাপুরে যান। গত ৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে তিনি জাকার্তার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন।
রাষ্ট্রপতি, তার স্ত্রী ও সফর সঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলে রীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। এ সময়ে বিমানবন্দরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ডিন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত, তিন বাহিনী প্রধান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) সহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান।
ইন্দোনেশিয়ায় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ৫-৭ সেপ্টেম্বর জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে তিন দিনব্যাপী ৪৩তম ‘আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন’, ১৮তম ‘পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন’ ও সাইডলাইনে অন্যান্য কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দেন।
ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট- আসিয়ান ২০২৩ এর সভাপতি জোকো উইডোডোর (জোকোই) আমন্ত্রণে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাকার্তায় যান। তিনি সেখানে ৪-৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবস্থান করেন।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন, তার স্ত্রীসহ ৫ সেপ্টেম্বর সকালে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারস বিষয়ক বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনও সেখানে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন।
৪৩তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসিয়ান দেশগুলোর ১০ সাংগঠনিক নেতা এবং কিছু রাষ্ট্রীয় নেতা, রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরাসহ অংশীদার দেশগুলোও এতে অংশ নিয়েছেন। আয়োজক দেশ ইন্দোনেশিয়া জাকার্তা আসিয়ান সম্মেলনের জন্য ২৭জন বিশ্ব নেতা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকদের আমন্ত্রণ জানায়।
রাষ্ট্রপতি ৬ সেপ্টেম্বর তার ইন্দোনেশিয়ান সমকক্ষ জোকো উইডোডো এবং ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মহাসচিব ড. সালমান আল ফারিসির সঙ্গে আলাদা দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকও করেছেন। শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ১৮তম ‘পূর্ব এশিয়া’ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন ও ৭ সেপ্টেম্বর আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বক্তব্য দেন। পাশাপাশি আসিয়ানের বিভিন্ন বিষয় উত্থাপন করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, সাত বছর আগে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নেওয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১ দশমিক ২ মিলিয়ন মিয়ানমার নাগরিকের প্রত্যাবাসনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ এখন নানামুখী সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিশ্ব নেতাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
এদিকে, অনুষ্ঠানের ফাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তারা হলেন- জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও ম্যানুয়েল ডি অলিভেরা গুতেরেস, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন এবং লাও পিপলস ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক পার্টির প্রধানমন্ত্রী সোনেক্সে সিফানডোন। [সূত্র: বাসস]
সারাবাংলা/পিটিএম