যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ খান ব্রাদার্সের
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:২১
দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত ‘বিএফসিসিতে মাংস সরবরাহে অনিয়ম’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে মেসার্স খান ব্রাদার্স। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল আলিম খান এক প্রতিবাদলিপিতে প্রতিবেদনে উপস্থাপিত বিভিন্ন তথ্যকে ‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কু-উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছেন। এসব ‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কু-উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ সংবাদ প্রকাশ করায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন তিনি।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) যুগান্তরে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারে (বিএফসিসি) গরু ও খাসির মাংস সরবরাহ করে আসছে খান ব্রাদার্স। প্রতিবেদনে অভিযোগ, ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার নোয়াপাড়ায় মাংস প্রক্রিয়াজাত করার প্ল্যান্টের কথা বললেও খান ব্রাদার্স গাজীপুরের একটি বাড়ির পেছনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাংস প্রক্রিয়াজাত করে। সেখান থেকে মাংস কাটিং করে ডিপ ফ্রিজে ফ্রোজেন করে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কোল্ড রুমে রাখা হয়। সেখান থেকেই বিমানে সরবরাহ করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবাদলিপিতে খান ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল আলিম খান বলেন, ‘আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান ব্রাদার্সের নামে আইনিভাবে ব্যবসা করার লাইসেন্স পেয়ে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সুনামের সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মাছ, মাংস, ডিম, তেল, মসলাসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য সরবরাহের কাজ করে আসছি। বিএফসিসি ই-জিপি টেন্ডারের মাধ্যমে মাংস সরবারাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করলে আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করে ওই ই-জিপি টেন্ডারে অংশ নিই। তাতে সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত হয়ে বিধি অনুযায়ী কার্যাদেশ পাই।’
বিমানের ক্যাটারিং সার্ভিসে মাংস সরবরাহের পদ্ধতি বর্ণনা করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ‘কার্যাদেশের শর্ত অনুযায়ী মাংস সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে সংরক্ষণ করি। এরপর ময়মনসিংহে অবস্থিত আমার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ প্রসেসিং সেন্টার কে এন ফুডস লিমিটেডে সেই মাংস পাঠানো হয়। সেখানে অত্যন্ত মানসম্মতভাবে মাংস প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এরপর সরবরাহ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান বিএফসিসি বরাবর সেই মাংস সরবরাহ করি। এভাবে সরবরাহের প্রতিটি পর্যায়ে কার্যাদেশের সব শর্ত পূরণ করে সম্পূর্ণ মান নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা হয়।’
দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক বরাবর লেখা প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান বরাবর কার্যাদেশ দেওয়ার আগে দরপত্র আহ্বানকারী সংস্থা বিএফসিসি কর্তৃপক্ষ আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ কে এন ফুডস লিমিটেড নামক প্রসেসিং সেন্টারটি পরিদর্শন করে। প্রতিষ্ঠানটির মান সম্পর্কে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট হয়েই তারা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বরাবর কার্যাদেশ দেয়। কার্যাদেশ পাওয়ার পর আমি ওই প্রসেসিং সেন্টার বরাবর অগ্রিম টাকা পরিশোধ করি। এরপর থেকে তারা নিয়মিতভবে আমাদের সংগ্রহ করা মাংস প্রক্রিয়াজাত এবং অগ্রিম দেওয়া টাকা সমন্বয় করে আসছে।’
মো. আব্দুল আলিম খান প্রতিবাদলিপিতে লিখেছেন, ‘আপনার (দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক) প্রতিবেদক ওই মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সরবারাহ পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহ না করে ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মিথ্যা সংবাদটি প্রকাশ করেছেন, যা একদিকে যেমন আমার ব্যাক্তিগত সম্মান ও মর্যাদাহানি করেছে, অন্যদিকে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সুনামও তীব্রভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিএফসিসিতে কালো তালিকাভুক্ত কোনো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার ও আমার প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিবেদককে বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে ওই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে।’
‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় আমার ও আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যপক অর্থনৈতিক ক্ষতিসহ মানহানি ও সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে’ উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে খান ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল আলিম খান ‘প্রকাশিত মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ সংবাদ অবিলম্বে প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছেন এবং এ সংবাদে কাউকে বিভ্রান্ত না হতে আহ্বান জানিয়েছেন। মাংস সরবরাহের ক্ষেত্রে সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের ধাপগুলো বিএফসিসির কার্যাদেশের শর্ত অনুসরণ করে মানসম্মতভাবে করা হচ্ছে কি না— তা সরবরাহ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান বা প্রতিবেদক সরেজমিনে পরিদর্শন করতে চাইলে সে উদ্যোগকেও স্বাগত জানিয়েছেন খান ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী।
[বিজ্ঞাপন]
সারাবাংলা/টিআর