খুলনায় সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে মিলছে না আলু-পেঁয়াজ-ডিম
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৩৬
খুলনা: বাজার লাগাম টানতে গত বৃহস্পতিবার আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম কমিয়ে নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত কার্যকরে সর্বাত্মক শক্তি প্রয়োগের কথাও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ঘোষণার পর থেকেই বাজারে এ দাম কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া দাম মানছেন না বিক্রেতারা। এখন পর্যন্ত খুলনার বাজারগুলোতে ১২ টাকায় ডিম, ৩৫ টাকায় আলু ও ৬৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ মিলছে না। বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) খুলনার বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি আলু ৫০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা ও ব্রয়লার মুরগির ডিম প্রতিহালি ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোজ্য সয়াবিনের দাম রয়েছে এখনও ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। কমছে না নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম। বাজারে ৪০ থেকে ৫০ নিচে মিলছে না সবজি।
নগরীর স্ট্যান্ড রোডস্থ কেসিসি সুপার মার্কেট ও ময়লাপোতা কেসিসি সন্ধ্যা বাজারে প্রতিকেজি বেগুন ৬০ টাকা, করলা ৫০, কাঁচামরিচ ১৩০ টাকা, পটল ৪০ কাকরোল ৫০ টমোটো ৭০, রসুন ২৮০, ঝিঙে ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা দরে। বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে ক্রয় করা খুবই কষ্টের। কমছে না মসুর ডালের দাম।
রোববার বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মসুর ডাল (সরু) ১৪০ টাকা, মসুর ডাল (মোটা) ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে ভোজ্য সয়াবিন ফ্রেশ (৫ লিটার) ৮৫০ টাকা, তীর (৫ লিটার) ৮৫০ টাকা, বসুন্ধরা (৫ লিটার) ৮৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি রসুন ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। অথচ দুই মাস আগেও প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দবে। দিনদিন বেড়েই চলেছে ব্রয়লার মুরগির দাম।
রূপসা উপজেলার কাজদিয়া বাজারের ডিম ব্যবসায়ী খাঁন মিজানুর রহমান বলেন, ‘সরকার পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দায়িত্ব শেষ করে বসে থাকে। পাইকারি বাজারে দাম না কমালে আমরা খুচরা বিক্রেতারা কি করে দাম কমিয়ে বিক্রি করব। যারা দাম বাড়ায় তাদের না ধরে তদারকি সংস্থা আমাদের ধরে। জরিমানা করে। এছাড়া ক্রেতারাও আমাদের গালাগাল করেন। প্রতি হালি ফার্মের ডিম কেনা হয়েছে ৪৮ টাকায়। এখন হাঠাৎ করে কীভাবে একই দামে বিক্রি করি।’
মহানগরীর গল্লামারী বাজারে আসা ক্রেতা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সরকার আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু সরকার নির্ধারণ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে না। পূর্বের দামেই কিনতে হচ্ছে।’
রূপসা বাজারের ব্যবসায়ী জামাল শেখ বলেন, ‘প্রতিকেজি আলু ৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। সবজির দাম কখনো কমছে, কখনো বাড়ছে। আমরা পাইকারি বাজার থেকে যে দামে পণ্য ক্রয় করি। তার থেকে সামান্য লাভে সেগুলো বিক্রি করি।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর খুলনার সহকারী পরিচালক মো. অলিদ বিন হাবিব বলেন, ‘আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারণ মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/একে