দরপত্র প্রক্রিয়া সংস্কারের সুযোগ রয়েছে: বিআইডিএস
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৩৬
ঢাকা: সরকারি কেনাকাটায় দরপত্র প্রক্রিয়ায় সংস্কারের সুযোগ আছে বলে মনে করছেন বিশেজ্ঞরা। বিশেষ করে কোরিয়াসহ উন্নত দেশগুলো যেসব পদ্ধতি অনুসরণ করে তা কাজে লাগানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়া কিংবা ব্যাপক প্রাতযোগিতা মানেই ভালো দরপত্র প্রক্রিয়া হয়েছে সেটি ভাবার সুযোগ নেই। কেননা অনেক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বেশি হলে কাজের মান খারপও হতে পারে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) আয়োজিত সেমিনারে এমন তাগিদ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার আগারগাঁও এ বিআইডিএস সন্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ফাহাদ খলিল। ‘কম্পিটিটিভ প্রকিউরমেন্ট উইথ এক্স পোস্ট মোরাল হ্যাজার্ড’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড.আব্দুস সাত্তার মণ্ডল এবং বিআইডিএসের গবেষকরা।
অধ্যাপক ফাহাদ খলিল বলেন, ‘সরকারি কেনাকাটায় দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধের অন্যতম উপায় হলো পদ্ধতিগত সংস্কার। এক্ষেত্রে কোরিয়ার মডেল হলো দরপত্র জমা হওয়ার পর সবগুলো খুলে ঠিকাদারে যে দর দেন সেগুলো গড় করা হয়। এরপর গড়ের কাছাকাছি যার দাম হয় তাকে কাজ দেওয়া হয়। প্রচলিত ধারণা হলো— দরপত্র বেশি প্রতিযোগিতা হলেই ভালো। কিন্তু এটি সবসময় ভালো নাও হতে পারে। এর ফলে যে কাজ পাবেন তিনি পরবর্তীতে মানসম্মত কাজ নাও করতে পারেন। তাই শুধু কাজ দিয়ে বসে থাকলে হবে তদারকি বাড়াতে হবে। এখানে ঠিকাদার বাছাইয়ের সঙ্গে তদারকিরও ভূমিকা ব্যাপক।
তিনি আরও বলেন, ‘সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দিতে হবে এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কেননা ঠিকাদার কাজ পাওয়ার জন্য কম দর দিতে পারে। পরে দেখা যাবে কাজের মান খারাপ হবে। কিংবা প্রকল্পের ক্ষেত্রে টাইম ওভাররান ও কস্ট ওভার রান হতে পারে। পাশাপাশি ঠিকাদারদের জন্য ভালোকাজের প্রণোদনা এবং খারাপ কাজের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা রাখতে হবে। সেমিনারে ফাহাদ খলিল চিলি, চীন, ইতালি, জাপান, পেরু ও সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের দরপত্র প্রক্রিয়া তুলে ধরেন।
ড. বিনায়ক সেন বলেন, ‘বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির ঘটনা ঘটছে। এক্ষেত্রে ঘুরেফিরে একই ঠিকাদার কাজ পাচ্ছেন। কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে লো কস্ট বিবেচনা বড় কথা হওয়া উচিত নয়। এখানে প্রকিউরমেন্ট রুলে সংস্কারের সুযোগ আছে। এটি সরকার ভেবে দেখতে পারে। প্রফেসর ফাহাদ খলিল অনেকগুলো দেশের দরপত্র পদ্ধতির মডেল উপস্থাপন করেছেন। সেগুলো থেকেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা দরকার।’
ড. আব্দুস সাত্তার মণ্ডল বলেন, ‘দুর্নীতি বন্ধে ইজিপি ভালো কাজ করছে। তবে প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়েও আমাদের চিন্তা ভাবনা প্রসারিত করা দরকার। ফাহাদ খলিলের দেওয়া উদাহরণগুলো ভেবে দেখা প্রয়োজন। তবে দরপত্র প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা যুক্ত থাকেন তাদেরও সৎ ও স্বচ্ছ হতে হবে।’
সারাবাংলা/জেজে/একে