১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ

ঢাকা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময় দেশব্যাপী ইলিশ পরিবহণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময়ও নিষিদ্ধ থাকবে। একইসঙ্গে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন করা হবে। এ সময় ইলিশ আহরণে বিরত থাকা জেলেদের সরকার ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা দেবে।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভায় মন্ত্রী এসব কথা জানান। উৎপাদন বাড়াতে প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ বন্ধের সময় নির্ধারণ এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৩ বাস্তবায়নের জন্য এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন তিনি।

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদই শুধু নয়, এটি জিআই সনদপ্রাপ্ত একটি সম্পদ, যা বিশ্বে আমাদের আলাদা পরিচয় বহন করে। অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্ষেত্রে ইলিশ উৎপাদনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট সবার অবদান রয়েছে। ইলিশ সংরক্ষণে মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা, স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, মৎস্যজীবী ও মৎস্যজীবীদের বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালনের কারণে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে।

তিনি বলেন, দেশে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অভয়াশ্রম সৃষ্টি, বিভিন্ন সময়ে ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখা, জাটকা নিধন বন্ধ করা, আহরণ বন্ধ থাকাকালে ইলিশ আহরণে সম্পৃক্ত জেলেদের ভিজিএফ সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়াসহ নানাভাবে সরকার কাজ করছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে মৎস্যজীবীরাই সে ইলিশ আহরণ করবেন। তারাই লাভবান হবেন। সরকার শুধু ইলিশ উৎপাদনের পরিসর বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে। জাতীয় সম্পদ ইলিশ যাতে কোনোভাবে বিপন্ন না হয় সেক্ষেত্রে কাজ করতে হবে। ইলিশ সারাদেশের সম্পদ। এজন্য এ মাছ রক্ষায় সবাই মিলে আন্তরিকভাবে ভূমিকা রাখতে হবে।

ইলিশ সংক্রান্ত জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সভা দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা এবং জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ দ্রুত বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে ইলিশ রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব নৃপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, এ টি এম মোস্তফা কামাল, মো. আব্দুল কাইয়ূম ও মো. তোফাজ্জেল হোসেন, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক খ মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০ এর অধীন প্রণীত প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫ অনুযায়ী প্রতিবছর প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহণ, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

সারাবাংলা/জিএস/এনএস

ইলিশ ইলিশ আহরণ