Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মহামারি প্রতিরোধে বৈশ্বিক সহযোগিতা কাঠামো তৈরি করুন’

সারাবাংলা ডেস্ক
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:৫১

নিউইয়র্ক: মহামারি প্রতিরোধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরে একটি বৈশ্বিক সহযোগিতা কাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে হাজির হয়েছে। আমরা সারাবিশ্বে অনেককে হারিয়েছি। আর বুঝতে পেরেছি যে, মানুষের হস্তক্ষেপের জন্য প্রকৃতির নিজস্ব সীমা রয়েছে। আমরা বিশ্ব সংহতির অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতাও পেয়েছি। আর স্বীকার করেছি যে, সবাই নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউই নিরাপদ নই।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া (পিপিপিআর) বিষয়ে ৭৮তম ইউএনজিএ উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এ সব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই উত্তম চর্চা বাড়িয়ে এবং অতীতের ভুলগুলো এড়িয়ে সম্মিলিত শিক্ষা নিতে হবে। সমতা ও সংহতি অবশ্যই আমাদের প্রচেষ্টার প্রাণভ্রমরা তৈরি করবে।’

মহামারি প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি অগ্রাধিকার তুলে ধরেছেন। পাঁচটির মধ্যে তিনটি অগ্রাধিকার হলো- উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য রেয়াতযোগ্য আন্তর্জাতিক অর্থায়ন; মহামারি নজরদারি, প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও বিজ্ঞান-ভিত্তিক পদ্ধতিতে মোকাবিলার জন্য সম্পদ ও দক্ষতা একত্রিত করা; সকলের জন্য ভ্যাকসিনসহ মানসম্পন্ন, সাশ্রয়ী ও কার্যকর মহামারি পণ্যগুলোর ন্যায়সঙ্গত ও অবাধ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা।

অবশিষ্ট দুটি অগ্রাধিকার হলো- প্রযুক্তির প্রাপ্যতা ও বাস্তব জ্ঞানের মাধ্যমে মহামারি পণ্যগুলোর উৎপাদন বৈচিত্রকরণ; এবং ডব্লিউএইচও’র নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে প্রাপ্যতা ও সুবিধা ভাগ করে নেওয়ার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কাঠামো তৈরি করা।

তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্যে আমরা একটি মহামারি চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধিমালা (২০০৫) এর সংশোধনী থেকে ন্যায্য এবং সুনির্দিষ্ট ফলাফল দেখার আশা করি। বাংলাদেশ উভয় প্রক্রিয়ার সঙ্গে গঠনমূলকভাবে জড়িত থাকবে।’

ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) থিমেটিক দূত সায়মা ওয়াজেদের উপস্থিতিতে সভায় শেখ হাসিনা ‘বাংলাদেশ কোভিড-১৯ এর প্রভাবের বাইরে ছিল না’ উল্লেখ করে বলেন, ‘তবু আমরা কোভিড-১৯ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক সূচকে পঞ্চম স্থানে রয়েছি। শুরু থেকেই, আমাদের জীবন বাঁচানো ও জীবিকা রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়েছিল।’

বিজ্ঞাপন

প্রথম দিকে ডব্লিউএইচও’র সহায়তায় একটি জাতীয় প্রস্তুতি ও পরিস্থিতি মোকাবিলা পরিকল্পনা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা গরিবদের জন্য বিনামূল্যে ওষুধ ও পিপিই সরবরাহ নিশ্চিত করি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি করি। শূন্য থেকে ৮৮৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষাগার স্থাপন করা হয়। প্রায় সব হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় ১১ হাজার ডাক্তার ও ১৩ হাজার মেডিকেল সাপোর্ট স্টাফ নিয়োগ করা হয়। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশে রাখাসহ আমাদের ফ্রন্টলাইন কর্মীরা বিস্ময়করভাবে কাজ করেছে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পরিচালনার জন্য একটি ডেডিকেটেড ডিজিটাল অ্যাপ চালু করা হয়। আমরা কমপক্ষে দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে ৯৩ শতাংশ ভ্যাকসিন কভার করেছি। আমি মহামারি ভ্যাকসিনগুলোকে বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের পণ্য হিসাবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছি।’

সরকার ২৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের একটি প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ৪ কোটিরও বেশি নিম্ন আয়ের মানুষকে সরাসরি খাদ্য সহায়তা দিয়েছি।’ বাংলাদেশ অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর পাশাপাশি বিদেশে অবস্থানরত অভিবাসী কর্মীদের দিকেও সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা। [সূত্র: বাসস]

সারাবাংলা/পিটিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক সহযোগিতা কাঠামো মহামারি প্রতিরোধ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর