জোট করতে চায় গণফোরাম, সঙ্গী সিপিবি-বাসদ
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৩৬
ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোট আর জোটের রাজনীতি গতি পেয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আর রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটগুলো যথেষ্টই সক্রিয়। এর বাইরেও একাধিক জোট গড়ে উঠেছে এবং নতুন জোটের ঘোষণায় রয়েছে। সেই পথে হাঁটতে চাইছে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামও। জোটের সঙ্গী হিসেবে তাদের পছন্দ বামপন্থি রাজনৈতিক ধারার দলগুলো।
গণফোরামের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জোটের ভাবনায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ছাড়াও শরীফ নূরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিসহ (ন্যাপ) বেশকিছু বাম রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করেছে গণফোরাম। তবে সব আলোচনাই এখন পর্যন্ত অনানুষ্ঠিক। পরের ধাপে আনুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে গণফোরাম জোট গঠনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে চায়।
গণফোরাম নেতা আ্যাডভোকেট আলতাফ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার পক্ষের প্রগতিশীল দলগুলোর সাথে নির্বাচনী জোট করতে চাচ্ছি। এ নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। জাসদ (আম্বিয়া), সিপিবি, ন্যাপসহ অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে জোট করে গণফোরাম সামনে পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে।’
আ্যাডভোকেট আলতাফ আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর। আগামী মাসটি (অক্টোবর) আমরা গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করে তারপর পদক্ষেপ নেব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স সারাবাংলাকে বলেন, ‘তিন-চার মাস এক অনুষ্ঠানে গণফোরামের নেতাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ-কথা হয়েছিল। পরে আমাদের সঙ্গে তাদের বসার কথা ছিল। কিন্তু তারা আসেনি। ফলে জোট নিয়ে তাদের সঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোনো আলোচনা হয়নি।’
আলোচনা না হলেও গণফোরামের সঙ্গে জোট করতে আপত্তি নেই জানিয়ে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তাদের সঙ্গে জোট করতে তাদের আমাদের আপত্তি নেই। প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টির বাইরে যে কারও সঙ্গেই সিপিবি জোট করতে পারে বা জোটে অংশগ্রহণ করতে পারে। তবে তাদের জনগণের দাবি নিয়ে মাঠে নামতে হবে। গণফোরামকেও জোট করার আগে মাঠে নামতে হবে, যদিও তাদের অতীত কর্মকাণ্ড অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ।’
গণফোরাম সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনের মাঠে নামার আগে অক্টোবর মাসকে তারা পর্যবেক্ষণের সময় হিসেবে বিবেচনা করছে। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, সরকারবিরোধী দলগুলো আন্দোলনের মাধ্যমে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক বা নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি আদায় করতে পারলে নির্বাচন সামনে রেখে গণফোরামের ভূমিকা হবে একরকম। আর তা না হলে দলটি ভিন্ন কৌশল নেবে।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান সংকট নিরসনে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ ছয় দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন তিনি।
দলীয় সূত্র বলছে, ওই প্রস্তাব উত্থাপনের পর দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কনভেনশন করার কথা ছিল ড. কামালের। সেখান থেকেই রাজনৈতিক কর্মসূচির দিকনির্দেশনা আসার কথা ছিল। তবে কনভেনশন আয়োজনের পরিকল্পনা থেকে দূরে সরে গেছে দলটি।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর