বঙ্গোপসাগরে ‘মাতারবাড়ি চ্যানেলের’ নিয়ন্ত্রণ পেল চট্টগ্রাম বন্দর
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৫৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বঙ্গোসাগরের তীরে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় নির্মিত ‘মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেলের’ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সামগ্রী বহনকারী জাহাজ ভেড়াতে চ্যানেলটি খনন করে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল)।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী চ্যানেলটির নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর।
২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো ইন্দোনেশিয়ার একটি জাহাজ ভেড়ার মধ্য দিয়ে চ্যানেলটি চালু হয়েছিল। তিন বছরের মাথায় বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে চ্যানেলটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সিপিজিসিবিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদের কাছ থেকে চ্যানেলের নিয়ন্ত্রণ বুঝে নেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। এ সময় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ্য সচিব মো. মোস্তফা কামাল ও বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ্য সচিব মো. হাবিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, এখন থেকে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেলের ব্যবহার, সংরক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরিভাবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত হলো। এ চ্যানেল ব্যবহার করে আসা সমুদ্রগামী জাহাজের সব ধরনের শুল্ক বন্দর কর্তৃপক্ষ আদায় করবে। এসব শুল্কের মধ্যে আছে- পোর্ট ডিউজ, বার্থ হায়ার চার্জ, পাইলটিং, টাগ চার্জ, বার্থিং-আনবার্থিং এবং অন্যান্য চার্জ।
জানা গেছে, চ্যানেলটি ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ, ৩৫০ মিটার প্রশস্ত এবং ১৮ দশমিক ৫ মিটার গভীর। বাংলাদেশে এখন এটি সবচেয়ে গভীর চ্যানেল। গত বছরের ১৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের চ্যানেল হস্তান্তর বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্তের আলোকে মাতারবাড়ী চ্যানেলটি সিপিজিসিবিএল বন্দরের কাছে হস্তান্তর করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মার্চে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেকে) অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে প্রায় ১২ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান। আর সরকার ২ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা এবং চট্টগ্রাম বন্দর ২ হাজার ২১৩ কোটি টাকার জোগান দিচ্ছে।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল জানিয়েছিলেন, দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর মাতারবাড়ীর টার্মিনাল নির্মাণের কাজ এ বছর শুরু হতে পারে। টার্মিনাল নির্মাণকাজের ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্র মূল্যায়নের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কার্যাদেশ দেওয়ার পরই নির্মাণকাজ শুরু হবে। ২০২৬ সালে টার্মিনাল চালু হবে। এই টার্মিনালে কনটেইনারবাহী বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে।
সারাবাংলা/আরডি/ইআ