সমিতির টাকা আত্মসাতের দায় ‘এড়াতে’ সংবাদ সম্মেলন
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৪২
ঠাকুরগাঁও: রংধনু বহুমুখী সমবায় সমিতি’র সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দীন নিজের দায় এড়াতে ওই প্রতিষ্ঠানে সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণির বিরুদ্ধে ৪টি মাইক্রোবাসসহ অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ‘নেতাদের কোন্দলে বন্ধ সমবায় সমিতি, ক্ষতি হাজারো গ্রাহকের’ শিরোনামে সারাবাংলা ও দৈনিক সারাবাংলায় সংবাদ প্রকাশের পর তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে গিয়াস উদ্দীনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রায়হান কবির।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, পীরগঞ্জ পৌর শহরের কলেজ বাজারে রংধনু বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ (রেজিঃ নং- ৩৩, তারিখ- ১৯ নভেম্বর ২০০০) নামে সমবায় সমিতি গঠন করা হয়। সমিতির সভাপতি হিসেবে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন গিয়াস উদ্দীন। তখন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন ওসমান গণি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তখন সমিতির নিজস্ব টাকায় ৪টি মাইক্রোবাস ও ১টি মোটরসাইকেল কেনা হয়। ঋণও দেওয়া হয় অনেককে। সদস্যদের বহু টাকা সমিতিতে আমানত হিসেবে জমাও থাকে। গিয়াস উদ্দীনের পর সমিতির সভাপতি হিসেবে আমিনুল ইসলাম দায়িত্ব ভার নেন। তখন সোনালী ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসমান গণি, সমিতির মইনুল ইসলাম, সুজাদুর রহমান ও মামুনকে হাত করে সুকৌশলে সমিতির কেনা ৪টি মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল বিক্রি করেন এবং সদস্যদের জমানো সঞ্চয়ের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে সমিতির কার্যক্রম চালাতে থাকেন।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা, সমিতির টাকা দিয়েই ওসমান গণি ১৭ লাখ টাকা ব্যয় করে মেয়েকে একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করান। ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে করে আরেক মেয়েকে বিয়ে দেন। এছাড়াও পীরগঞ্জ পৌর শহরের রঘুনাথপুর মৌজায় ১৫ শতাংশ জমির উপর ৫ তলা ভবন নির্মাণ করছেন ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, সমিতির টাকা আত্মসাৎ করে সুপরিকল্পিতভাবে সমিতিকে দেউলিয়া বানান ওসমান গণি। সেই সাথে সদস্যদের জমানো টাকা ফেরৎ না দিয়ে কৌশলে সমিতির কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
সমিতির কার্যক্রম নিস্ক্রিয় হয়ে পড়লে ২০১৬ সালে সমিতির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যায়। সমিতির রেজিস্ট্রেশন বাতিল হওয়ার পর থেকেই ওসমান গণি নিজেকে রক্ষা করতে সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দীনের ওপর সমিতির দায়ভার চাপিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে লুটপাট চালায়। গিয়াস উদ্দীনকে নাজেহাল করতে তার বিরুদ্ধে আদালতে নানা ধরণের হয়রানিমূলক মামলাও করে।
মামলায় হেরে গিয়ে গিয়াস উদ্দীনকে প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন ওসমান গণি ও তার লোকজন। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন গিয়াস উদ্দীন ও তার পরিবারের লোকজন।
তবে ওসমান গণি অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। গিয়াস উদ্দীন নিজের কাছে সমিতির সব ফাইলপত্র রেখেছেন। নিজের পরিবারের সদস্যসহ নামে-বেনামে সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এখন উল্টো আমার উপর দোষ চাপাচ্ছেন।’
সারাবাংলা/এমও