Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নেপালে শিক্ষা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষকদের ধর্মঘট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:০৩

ছবি: বিবিসি

নেপালে ব্যাপক আকারে ধর্মঘট পালন করেছেন দেশটির শিক্ষকরা। টানা তিনদিন ধরে চলা এই ধর্মঘটের কারণে দেশটির সব স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় লাখ লাখ শিক্ষার্থীর পাঠদান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। খবর বিবিসি।

দেশটির সংসদে উত্থাপিত শিক্ষা সংস্কার বিলের প্রতিবাদে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন শিক্ষকরা। এতে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার শিক্ষক অংশগ্রহণ করছেন।

ওই প্রস্তাবিত বিলে স্কুলগুলোতে স্থানীয়র সরকারের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে এবং শিক্ষকদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট সংগঠনে যোগদানের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যার বিরোধীতা করে রাস্তায় নেমেছেন শিক্ষকরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী রাজধানী কাঠমান্ডুতে অবস্থিত সংসদ ভবনের দিকে মিছিল করে। বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড অতিক্রম করার চেষ্টা করলে তাদের উপর লাঠিচার্জ করে দেশটির দাঙ্গা পুলিশ।

এ পরিস্থিতিতে ধর্মঘট বন্ধ করে পুনরায় ক্লাস চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

শিক্ষকরা বিলের একটি বিধানের প্রতিবাদ করছেন, যা তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোতে যোগদান করতে বাধা দেবে।

দেশের গণতন্ত্রের লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে জড়িত ছিলেন নেপালি শিক্ষকরা। ১৯৯৫ সালে দেশটিতে প্রথম সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিককর্মী হিসেবে শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দেয়।

তবে শিক্ষকদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ততার কারণে শিক্ষার গুণগত মান ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে কিছু শিক্ষাবিদ মনে করেন এবং এসব প্রতিষ্ঠানে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সরকার দ্বারা স্কুলগুলো তদারকি করার পরিকল্পনারও প্রতিবাদ করেছেন শিক্ষকরা। তাদের দাবি, এই ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকা উচিত।

ছবি: বিবিসি

ছবি: বিবিসি

২০১৫ সালে নেপালের সংবিধানে পরিবর্তন করে স্কুল ও হাসপাতালসহ বেশ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানের শাসন ব্যবস্থা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানান্তরিত হয়। কাঠমান্ডুতে সব্বোর্চ ক্ষমতা এবং সম্পদের কেন্দ্রীভূত হওয়ার অশঙ্কা থেকে সংবিধানে এই সংশোধনী আনা হয়।

তবে শিক্ষকদের অভিযোগ করছেন, স্থানীয় কর্মকর্তারা বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য যথাযথ প্রস্তুত নন এবং তারা শিক্ষার গুণমানকে নিম্নমুখী করেছেন।

অনেক নেপালি অবশ্য এই বিলের সমর্থন করে। তারা বিশ্বাস করেন, এই আইন শিক্ষকদের মধ্যে আরও বেশি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করবে।

একইসঙ্গে শিক্ষকরা সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি তুলেছেন। এর মধ্যে পদোন্নতি ও বদলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত স্থানীয় পৌরসভার পরিবর্তে প্রাদেশিক পর্যায়ে ন্যস্ত করার দাবি অন্যতম। এছাড়াও বেতন বাড়ানো, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ তত্ত্বাবধানের জন্য একটি কাউন্সিল গঠন এবং চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ী করার দাবি জানান হয়েছে।

নেপাল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কমলা তুলাধর বলেছেন, সরকার তাদের উদ্বেগগুলো সমাধানের জন্য শিক্ষকদের সঙ্গে করা ‘চুক্তি’ বাস্তবায়ন করেনি। তিনি আরও বলেন, ‘অনেক বিষয়ের সুরাহা হয়নি, তাই আমরা প্রতিবাদ করতে বাধ্য হয়েছি।’

তবে নেপালের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী পূর্ণ বাহাদুর বলেন, শিক্ষকরা ‘তাদের দাবি সম্পর্কে সরকারকে না জানিয়েই বিক্ষোভ শুরু করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) ও গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা। তবে দুই দফায় ‘ইতিবাচক’ আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত পৌঁছানো যায়নি বলে জানান কর্মকর্তারা। এদিকে দাবি মানা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন শিক্ষকরা।

সারাবাংলা/এনএস

নেপাল শিক্ষক ধর্মঘট

বিজ্ঞাপন

আদানি গ্রুপের নতুন সংকট
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬

আরো

সম্পর্কিত খবর