Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সমাজসেবা কর্মীকে উপজেলা চেয়ারম্যানের মারধরের ভিডিও ভাইরাল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৫৮

ছবি: ফেসবুকের ভিডিও থেকে নেওয়া

কক্সবাজার: ‘সালাম না দেওয়ার অজুহাতে’ কক্সবাজার সদর উপজেলার চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল প্রকাশ্যে মারধর করেছেন সমাজসেবা কার্যালয়ের এক ইউনিয়ন কর্মীকে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে দেখা গেছে, কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে একজনকে প্রকাশ্যে কিল-ঘুষি ও লাফি মারছেন উপজেলার চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল। মারধরে শিকার ব্যক্তিকে নিজকে রক্ষা করতে নানাভাবে মিনতি করছেন। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা কয়েকজন লোক ভুক্তভোগীকে রক্ষা করতে চেয়েও ব্যর্থ হন।

ভিডিওটিতে বিস্তারিত কিছুই না জানিয়ে লেখা হয়েছে, ‘কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদে সমাজসেবা অফিসারকে প্রকাশ্যে মারধর।’

ভিডিওটির সূত্র ধরে একাধিক ব্যক্তি, সমাজসেবা কার্যালয়ের সদর উপজেলা ও জেলা কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে মারধরে শিকার ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

তারা জানিয়েছেন, মারধরের শিকার ব্যক্তি কক্সবাজার সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অধীনে ইউনিয়ন পর্যায়ের একজন কর্মী। মোর্শেদ আলম নামের ওই যুবক সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী, ভারুয়াখালী, পোকখালী ও পিএমখালী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত। এই ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে গত ১৬ আগস্ট দুপুর দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে।

তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো ধরনের কথা বলতে রাজি নন ভুক্তভোগী মোর্শেদ আলম। ঘটনার পর থেকে তিনি যেন এখনো অজানা আতঙ্কে রয়েছেন। এছাড়াও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, মোর্শেদের কয়েকজন সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি নন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের একজন বলেন, ‘মোর্শেদ প্রতিদিনের মতো ১৬ আগস্ট কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের এক পাশে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছোটন নামের এক সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। এসময় মোর্শেদের পেছন থেকে এসে পরিষদে প্রবেশ করছেন চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল। ছোটন চেয়ারম্যানকে দেখে সালাম জানালেও মোর্শেদ তা দেখেননি।’

‘সালাম না দেওয়ার অজুহাতে উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল প্রকাশ্যে মারধর করেন মোর্শেদকে। এতে মোর্শেদের মাথা ফেটে রক্তাক্ত হয়েছে যায়। যদিও রক্তাক্ত হওয়ার দৃশ্যটি ভিডিওতে নেই। সহকর্মীরা মোর্শেদকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।’

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের নথিপত্রে দেখা গেছে, ‘ঘটনার দিন ১৬ আগস্ট বিকাল ৩টার পরেই মোর্শেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।’

মোর্শেদের পরিবারের সদস্যরা জানান, টানা ১০-১২ দিন চিকিৎসা শেষে মোর্শেদ ফিরলেও নানা হুমকির কারণে বিষয়টি নিয়ে কোথাও কোন ধরনের অভিযোগ করেননি।

মারধরের ঘটনার কথা শুনেছেন বলে স্বীকার করেছেন কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া ও কক্সবাজার জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক হাসান মাসুদ। তবে এই দুই কর্মকর্তার দাবি, ঘটনায় শিকার ব্যক্তি কোনো অভিযোগ বা মৌখিকভাবে তাদের বিষয়টি স্বীকার করেননি।

উপজেলার চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, নিজ পিতাকে বঙ্গবন্ধুর সমতুল্য দাবি করে নানাভাবে আলোচনায় আসেন।

সর্বশেষ গত ১২ জুন অনুষ্ঠিত কক্সবাজার পৌর নির্বাচনে কায়সারুল হক জুয়েলের বড় ভাই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে জুয়েলসহ একই পরিবারের ৫ ভাই-বোন দল থেকে বহিষ্কার হন। এরই মধ্যে প্রকাশ্যে একজনকে মারধর করে আবারও আলোচিত-সমালোচিত হলেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে আলাপের জন্য কায়সারুল হক জুয়েলের ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে তিনি এক সপ্তাহ ধরে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

সারাবাংলা/ওএফএইচ/এনএস

কক্সবাজার কায়সারুল হক জুয়েল


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কুষ্টিয়া থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৮

সম্পর্কিত খবর