পশ্চিমা বিশ্ব ও আমেরিকা বাংলাদেশকে লাঠিয়াল বানাতে চায়: ইনু
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৩৪
ঢাকা: পশ্চিমা বিশ্ব ও আমেরিকা তাদের স্বার্থে বাংলাদেশকে লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
শনিবার ( ২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় শহীদ মিনারে জাতীয় যুব জোট আয়োজিত ৩য় জাতীয় কংগ্রেসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘বিদেশিদের নির্বাচনের গণতন্ত্র কোনো স্বার্থ না। বিদেশিরা ভূ-রাজনীতির স্বার্থে তাদের পছন্দের সরকার। পশ্চিমা এবং আমেরিকা তাদের স্বার্থে বাংলাদেশকে তারা লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের সরকার এবং জনগণ তা হতে দেবে না। আমরা সমানে সমান বন্ধুত্ব চায়। বিদেশিরা চায় খুনি, জামায়াত, জঙ্গি, যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে মিটিং করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের স্বার্থে এটি হবে না। বিএনপি প্রকাশ্যে খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ চায়, তারেকের দণ্ড মুওকুফ চায়, খুনি, যুদ্ধাপরাধীদের দণ্ড মওকুফ চায়। সুতরাং নির্বাচন বিএনপির লক্ষ্য নয় তাদের চাওয়া সকল অপরাধীকে আবার রাজনীতির মাঠে ফেরত আনা। দুর্নীতিবাজ জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়া। বিএনপির তরুপের তাস হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি অস্বাভাবিক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাজাকার, জঙ্গি, খুনিদের আবার রাজনীতির মাঠে আনতে চায়। এক নতুন প্রান্তে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে। এই অবস্থায় আমাদের কি করণীয়। বাংলাদেশের গত ১৫ বছরের অর্জনকে ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশকে আরেকটি ধাপ উপরে উঠতে হবে। কিন্তু বৈষম্য, দুর্নীতি, লুটপাট, জঙ্গিবাদের আতঙ্ক কাঁধে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া যাবে না। তাই সন্ত্রাস, লুটপাট, দুর্নীতির ধারাকে বন্ধ করে সুশাসনের ধারা অর্জন করতে হবে। তবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের এখনো যেমন বৈষম্য চলছে তেমনিভাবে লুটপাটের ধারাও অব্যাহত আছে।’
ইনু আরও বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানাতে চায়। যারা মিটমাটের পক্ষে উকালতি করে সেই বিএনপি জামায়াত দেশকে আর বাংলাদেশ রাখতে চায় না। তারা দক্ষিণ এশিয়ার পূর্ব দিকে আরেকটা পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়। জঙ্গি উৎপাদনের কারখানা বানাতে চায়, তারা সন্ত্রাসী রফতানির দেশ বানাতে চায়। সুতরাং মিটমাটের কথা যারা বলে তাদের সাথে চুলপরিমাণও মিটমাট হবে না। মনে রাখতে হবে, বৈষম্য হলো গরীবের কান্না। দারিদ্র হচ্ছে লজ্জা, দুর্নীতি হচ্ছে জাতির জন্য কলঙ্ক আর দলবাজি হচ্ছে অভিশাপ। জঙ্গি-সন্ত্রাস হচ্ছে জাতির জন্য আতঙ্ক।’
জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, ‘আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের সমাজ বদলের লড়াই। বৈষম্যহীন এক পৃথিবীর জন্য আমাদের লড়াই। আজকের যে বাংলাদেশে আমরা রয়েছি সারা পৃথিবী বলছে, রোল মডেল এক বাংলাদেশ। আমরা এগিয়ে গেলেও লুটপাটের ধারাও অব্যাহত রয়েছে। পাহাড় সমান সম্পদ হলেও আমরা দেখছি বৈষম্যটাও বাড়ছে। উন্নয়ন যায় হোক না দুর্নীতি আমরা সহ্য করবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা এখনও বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়, যারা দেশকে চোরাবালিতে নিয়ে যেতে চায়, তারা আবার শেখ হাসিনার পদত্যাগ চায় আবার তত্ত্ববধায়ক সরকারও চায়। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চায়, শেখ হাসিনার পদত্যাগও নয় আবার তত্ত্ববধায়ক নয়। তবে নিয়মমাফিকভাবেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। বিএনপি-জামায়াত দেশে অস্বাভাবিক সরকার তৈরি করতে চায়। আমরা ২০০৬ সালে অস্বাভাবিক সরকার দেখেছি কিন্তু সেটি আর হবে না।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, জাসদের সহ-সভাপতি আফরোজা হক রীনা এমপি, স্থায়ী কমিটির সদস্য রবিউল আলম, জাতীয় যুব জোটের সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকন এবং জাতীয় যুব জোটের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপনসহ প্রমুখ।
সারাবাংলা/এসজে/একে