Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খুনের পর খণ্ডবিখণ্ড লাশ: স্ত্রী-সন্তান রিমান্ডে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:১৭

মো. হাসান

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে খুনের পর লাশ কয়েক টুকরো করে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেয়ার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ও ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সরোয়ার জাহান মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আসামিদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। গ্রেফতার দুজন হলেন— নিহতের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর সহকারী পুলিশ সুপার এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত পাঁচ দিনই মঞ্জুর করেছেন। এখনো উদ্ধার না হওয়া মাথার হদিস পেতে এবং হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

আরও পড়ুন- ২৭ বছর ‘দেশান্তরী’, ফেরার পর স্ত্রী-ছেলেদের হাতে খণ্ডবিখণ্ড লাশ

গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর পতেঙ্গা বোট ক্লাবের অদূরে ১২ নম্বর গেটে ট্রলিব্যাগটি পাওয়া যায়। কফি রঙের ট্রলিব্যাগে ছিল মানব শরীরের দুই হাত, দুই পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ। এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির হত্যা মামলা করেন।

এর দুই দিনের মাথায় শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর আকমল আলী সড়কের খালপাড়ে একটি খাল থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় টেপে মোড়ানো শরীরের আরেকটি খণ্ড উদ্ধার করে পিবিআই। এ ছাড়া আঙুলের ছাপ ও নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে নিহত ব্যক্তির পরিচয়ও নিশ্চিত করা হয়। গ্রেফতার করা হয় স্ত্রী ও বড় ছেলেকে।

বিজ্ঞাপন

নিহত মো. হাসান (৬১) চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের বড়ইতলী গ্রামের সাহাব মিয়ার ছেলে। পিবিআইয়ের সংগ্রহ করা তার জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) অস্থায়ী ঠিকানা লেখা আছে— সিলেট সদরের সাধুর বাজারসংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির জামাল মিয়ার গ্যারেজ।

হাসানের লাশের খণ্ডাংশ বস্তায় নিয়ে ফেলে দেন ছোট ছেলে

পিবিআইয়ের ভাষ্য, হাসান ২৭-২৮ বছর ধরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। কোথায় ছিলেন, সেটি তার স্ত্রী-সন্তানরা জানতেন না। সম্প্রতি তিনি ফিরে আসেন। বাঁশখালীতে হাসানের পৈতৃক কিছু সম্পদ আছে। স্ত্রী-সন্তানরা সেগুলো তাদের নামে লিখে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন হাসানের ওপর। কিন্তু হাসান সেগুলো দিতে সম্মত ছিলেন না। এতে স্ত্রী ও দুই ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলার ৭ নম্বর বাসায় হাসানকে ডেকে নেওয়া হয়। ওই বাসায় হাসানের ছোট ছেলে তার স্ত্রী-সন্তানসহ থাকেন। ঘটনার দিন সেখানে যান হাসানের স্ত্রী এবং বড় ছেলেও।

সম্পত্তির বিরোধে রাতে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এর একপর্যায়ে স্ত্রী, দুই ছেলে ও ছোট ছেলের স্ত্রী মিলে পরিকল্পিতভাবে হাসানকে খুন করেন। ঠান্ডা মাথায় লাশ কেটে টুকরো করে ট্রলিব্যাগে করে আট টুকরো ফেলা হয় পতেঙ্গা ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় খালে। মাথা ও বুকসহ শরীরের আরও কিছু অংশ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে পিবিআই। ছোট ছেলেই তার বাবার শরীরের টুকরোগুলো বিভিন্ন স্থানে ফেলেন।

ঘটনার পর গা ঢাকা দেওয়া ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আনারকলিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই কর্মকর্তা এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম।

আরও পড়ুন-

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

খণ্ডবিখণ্ড লাশ ট্রলিব্যাগে খণ্ডবিখণ্ড লাশ বাবাকে হত্যা লাশের খণ্ড উদ্ধার স্ত্রী-ছেলে রিমান্ডে

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর