Friday 02 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘দুর্যোগ প্রতিরোধে ক্ষতি প্রশমনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:৫৩ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০০:৫০

কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ডিজি। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব না হলেও এর প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, দুর্যোগে প্রাণহানি সহনীয় বা প্রতিরোধ এবং ক্ষতি প্রশমন করা সম্ভব। তবে কোনো দুর্যোগ সরকারের একার পক্ষে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অংশীজনের সহযোগিতা ও সচেতনতা প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় রাজধানীর মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় এ কথা বলেন তিনি। ‘দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণে কর্মকাঠামো এবং প্রাইভেট সেক্টর ওয়ার্কিং গ্রুপের কর্মপরিধি’ শীর্ষক কর্মশালাটি বিভিন্ন অংশীজনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, যেকোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যদি ফাস্ট রেসপন্ডার দ্রুত সাড়া দেন, তাহলে আগুনে ক্ষতি কম হয় বা প্রাথমিক পর্যায়েই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করছে জানিয়ে ডিজি বলেন, দুর্যোগ জীবন ঘনিষ্ঠ বিষয়। দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব না। প্রতিবছর বন্যা বা জলোচ্ছ্বাস আসবে, এটি অনুমিত। দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, প্রকৃতি কিন্তু অনেক বদলেছে। তাই আমাদেরও প্রস্তুতি রাখতে হবে। বন্যার আগে কক্সবাজারের কৃষকরা মোনাজাত পর্যন্ত করেছে। কিন্তু বৃষ্টি হয়নি। অথচ এক মাস পর বন্যা হয়ে গেল।

বিজ্ঞাপন

কর্মশালার একটি মুহূর্ত। ছবি: সারাবাংলা

দুর্যোগ ও এর প্রতিরোধ ব্যস্থাপনার সমালোচনা না করে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ডিজি বলেন, আমাদের উন্নয়ন কাজ চলবে। দুর্যোগে উন্নয়ন কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বলে সমালোচনা বা থেমে থাকলে হবে না। আর সব সরকার করে দেবে না। ব্যবসায় লাভবান হবেন, কিন্তু দুর্যোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা রাখবেন না, তা হবে না। নিজে সচেতন হই, শিখি, নিজের ঘরে স্ত্রী-সন্তানকে শেখাই। দুর্যোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি, নিরাপত্তা সরঞ্জাম কিনে করে ঘরে রাখি।

আগের তুলনায় মানুষ অনেক বেশি সচেতন হচ্ছে ও সরকারের সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে, দেখছে ও শুনছে উল্লেখ করে ডিজি মনে করেন, এতে সবাই শিখছে। বাংলাদেশ আগের তুলনায় অনেক বেশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা অর্জন করেছে।

কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা একটু সচেতন হলেই বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে পারতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক ব্যবসায়ী নগদ টাকা, ভাউচার রেখে গেছেন। সব পুড়ে ছাই হয়েছে কৃষি মার্কেটে। কোটিপতি ব্যবসায়ী আজ ফকির হয়েছেন। অথচ একটু সচেতনতাই আমাদের নিরাপদ করতে পারত। দুর্যোগে সচেতনতায় ও প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা প্রাইভেট সেক্টরকে সম্পৃক্ত করতে হবে। অস্ত্র থাকলেই তো হবে না, প্রশিক্ষণ লাগবে। ফায়ার অ্যালার্ম চালানো, পানির রিজার্ভ বাড়ানো ও হাইড্রেন্ট ব্যবস্থা ও চালানো, অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞানও অর্জন করতে হবে।

করণীয় উল্লেখ করে ডিজি বলেন, আমাদের অনেক বড় ভবনে ইমার্জেন্সি সিঁড়ি নেই। সেই সিঁড়ির ব্যবস্থা করতে হবে। ভবনে ফায়ার এক্সটিংগুইশার রাখতে হবে। নিয়মিত বৈদ্যুতিক লাইন চেক করতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়েই প্রাথমিকভাবে ফাইট করা যায়। সাধারণ কিছু জ্ঞান প্রয়োগেই আগুন প্রাথমিক পর্যায়েই আগুন প্রতিরোধ করতে পারি। সতর্কতা জরুরি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সুপার প্রকল্পের কনসোর্টিয়াম ম্যানেজার আ ম নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সভিত্তিক (এআই) মডেলটি ইনস্টল ও ব্যবহার করতে তাদের উৎসাহ দিচ্ছি। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে আগুন বা ধোঁয়া শনাক্ত করে তাৎক্ষণিক মেসেজ দেয়ার প্রজেক্ট নিয়েছি। দুবছর ধরে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। এটা আমরা ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কাজ করার প্রক্রিয়ায় যেতে চাচ্ছি।

অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএম) নিতাই চন্দ্র দে সরকার বলেন, ১০৯০-কে আমরা প্রমোট করছি। আগে টোল ছিল। সেটি ফ্রি করা হয়েছে। যে কেউ এখন খুব সহজেই এই নাম্বার ডায়াল করে দুর্যোগ ও আবহাওয়া সম্পর্কে জানতে পারছে।

স্ট্রেন্দেনিং আরবান পাবলিক প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স (সুপার) প্রকল্পটি একটি কনসোর্টিয়াম প্রকল্প। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইডের আর্থিক সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

ডিজি মিজানুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর