Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জমকালো আয়োজনে হবে বিচ কার্নিভাল, ১০ লাখ পর্যটক সমাগমের আশা

ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:৫৮

কক্সবাজার: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুনীল জলরাশি মানেই মুগ্ধতার ছোঁয়া। ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস’ উপলক্ষে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে পালিত হতে যাচ্ছে পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপি এই মেলাকে কেন্দ্র করে নানা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। থাকা-খাওয়া ভ্রমণসহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘোষণা করা হয়েছে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। পর্যটন সংশ্লিষ্টদের আশা, এই এক সপ্তাহে ১০ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম হবে।

বছরজুড়েই সৈকত ঘিরে থাকে ভ্রমণ পিপাসুদের আগ্রহ। এবার এই পর্যটন নগরীতেই বিশ্ব পর্যটন দিবসে হতে যাচ্ছে সপ্তাহব্যাপী মেলা ও বিচ কার্নিভাল। কার্নিভালকে ঘিরে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে লাবণী পয়েন্ট। মেলাকে কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। ফুটপাতে গড়ে তোলা হয়েছে দুই শতাধিক স্টল।

পর্যটন দিবস ঘিরে হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউসে ৭ দিনের জন্য দেওয়া হয়েছে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ ছাড়। বাস ভাড়ায় ২০ শতাংশ আর খাবারে ১৫ শতাংশ কম অর্থ গুণতে হবে পর্যটকদের। এছাড়া হেলিকপ্টার রাইড, ওয়াটার বাইক, বিচ বাইক, প্যারাসেইলিং, ছাতা চেয়ার, এমনকি গাড়ি পার্কিংয়েও থাকবে বিশেষ ছাড়। এতে আবাসন, খাবার, পরিবহনসহ সব মিলিয়ে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা হবে পারে বলে জানান পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। ছাড়ের মধ্য দিয়ে পর্যটকদের সেবা দিতে প্রস্তুত এই খাতের সংশ্লিষ্টরা।

বৃহত্তর বিচ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান জানান, পর্যটন মেলা উপলক্ষে বিশেষ ছাড় রয়েছে। এই ছাড়ের মধ্যে কিছু কিছু অব্যাহত থাকবে যদি পর্যটন আগমণ অব্যাহত থাকে। এছাড়া শুধু পর্যটন মেলায় সেবা দেওয়া হবে তাই নয়, এই সেবা থাকবে সারাবছর।

রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের আকর্ষণের বড় একটি অংশ দখল করে আছে রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড। যেখাবে সমুদ্র তলদেশের মাছ প্রদর্শন হয়। মেলা উপলক্ষে রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ডের টিকেটে থাকবে ৫০ শতাংশ ছাড়। এছাড়াও থাকবে নানা সুযোগ-সুবিধা।’

কক্সবাজার হোটেল-মোটল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘পর্যটকদের সেবায় অঙ্গীকারবদ্ধ পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। খাবারে ৬০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া একটা নিয়ম রয়েছে আবাসিক ডবল রুমে ২ জন এবং সিঙ্গেল রুমে ১ জন থাকবে। পর্যটন মেলায় যদি চাপ পাড়ে তাহলে এই নিয়ম ভাঙা হবে, অথাৎ পর্যটকদের আপত্তি না থাকলে ডবল এবং সিঙ্গেলরুমে একাধিক পর্যটক থাকতে পারবেন। এই সেবা সপ্তাহে পর্যটকদের সেবাটা শতভাগ নিশ্চিত করা হবে।’

পর্যটন মেলার আহ্বায়ক ও কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, প্রতিবছর পর্যটন মেলার আয়োজন করা হয়। তবে গতবারের চেয়ে এবারের আয়োজন ভিন্ন এবং আরও বড়। সৈকতের লাবণী পয়েন্টে সাত দিন ধরে প্রতিদিন মধ্যরাত পর্যন্ত থাকবে বিচ বাইক র‌্যালি, কনসার্ট, বিনামূল্যে সার্কাস প্রদর্শনী, জেট স্কি শো, আতশবাজি, ঘুড়ি উৎসব, ফায়ার স্পিন, সার্ফিং প্রদর্শনী, বিচ ম্যারাথন, ফানুস উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ডিজে শো, রোড শো, ম্যাজিক শো, ফায়ার স্পিন, লাইফ গার্ড রেসকিউ প্রদর্শনী, বিচ ভলিবলসহ নানা আয়োজন।

এছাড়া সমুদ্র সৈকতে থাকছে দুই শতাধিক স্টল। পর্যটন সেবার সবকিছু একটি পয়েন্টে প্রর্দশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিবহন থেকে শুরু করে প্রায় সব ক্ষেত্রে রয়েছে আর্কষণীয় ছাড়। এই মেলার মধ্য দিয়ে পর্যটকদের সেবা শতভাগ নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ অন্যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার রাখবে বলেও জানান মেলার আহ্বায়ক।

পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল চলাকালে বিপুল পর্যটক আসার সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার শেহরিন আলম বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামরার আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া পর্যটকরা যেকোনো অভিযোগ জানাতে চাইলে কন্ট্রোল রুমের নাম্বারে (০১৩২০১৬০০০০) ফোন করলেই সহযোগিতা করা হবে।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারে থাকা ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউসে ধারণ ক্ষমতা প্রায় দেড় লাখ। তবে মেলায় ১০ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগমের আশা করছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

সারাবাংলা/এমও

কক্সবাজার পর্যটক বিচ কার্নিভাল সমাগমের আশা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর