Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মিতু হত্যা মামলায় আরও ৪ জনের সাক্ষ্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৫৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় আরও চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করেছেন আদালত। এ নিয়ে আলোচিত এই মামলায় মোট ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে এই চারজন সাক্ষ্য দেন। এসময় মামলার আসামি বাবুল আক্তারসহ চারজন আদালতে হাজির ছিলেন।

আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর দুলাল চন্দ্র দেবনাথ সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, মিতু হত্যা মামলায় আজ সোমবার চারজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে কারও জেরা হয়নি। এর মধ্যে সে সময় সিআইডি চট্টগ্রামে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক (ব্যালাস্টিক এক্সপার্ট), ফলের দোকানদার, পুলিশ কনস্টেবল ও মিতুর একই ভবনের বাসিন্দা আছেন। আদালত মামলার কার্যক্রম আগামী ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত মূলতবি করেছেন। এই নিয়ে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে সেসময় সিআইডি চট্টগ্রামে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক ব্যালাস্টিক এক্সপার্ট আবদুর রহিম (৫৩) বলেন, ‘২০১৬ সালের ৩০ জুন সিএমপি ডিবি’র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. কামরুজ্জামানের কাছ থেকে পাওয়া স্মারক মূলে সাদা কাপড়ে মোড়ানো একটি কাগজের বাক্সের ভিতর সিলগালা অবস্থায় আলামত পাই।’

‘আলামত হিসেবে ৭ পয়েন্ট ৬৫ এমএম পিস্তলের দুইটি অব্যবহৃত, একটি ব্যবহৃত ও একটি মিস ফায়ার হওয়া কাতুর্জ, স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি পয়েন্ট ৩২ ক্যালিবারের রিভলবার, স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি রিভলবার পাওয়ার কথা আদালতে জানায়।’

এ সব আলামতের বিষয়ে মতামত, ব্যালাস্টিক রিপোর্ট ও রাসায়নিক প্রতিবেদন তিনি পরীক্ষা শেষে জমা দেন বলে আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে জানান।

বিজ্ঞাপন

আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে জিইসি মোড়ের একটি ফল দোকানের কর্মচারী আবদুর রহিম (৩৫) বলেন, ‘ঘটনার দিন সকালে দোকান খুলতে গেলে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও জড়ো হওয়া লোকজন দেখতে পাই। তারা জানায়, এখানে একজনকে সন্ত্রাসীরা মেরে চলে গেছে। সেখান থেকে পুলিশ তিনটি গুলি, একটি গুলির খোসা ও এক জোড়া স্যান্ডেল উদ্ধার করে জব্দ তালিকা করে। আমাকে স্বাক্ষর করতে বলায় আমি স্বাক্ষর করি।’

সেসময়ের পাঁচলাইশ থানার কনস্টেবল রনিতা বড়ুয়া আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে বলেন, ‘ঘটনার দিন সকাল ৬ টা ৪৫ মিনিটে এসআই ত্রিরতন বড়ুয়া ফোন করে বলে, জিইসি মোড়ে একটা লাশ আছে। ওখানে যেতে। আরো দুজন পুলিশ সদস্যসহ সেখানে যাই। ওখানে গিয়ে দেখি ওয়েল ফুডের সামে কালো বোরকা পরা একটি লাশ পড়ে আছে। এসআই ত্রিরতন বড়ুয়া সুরতহাল করেন। তাকে সহযোগিতা করি। তিনি জব্দ তালিকাও করেন।

মিতুর একই ভবনের বাসিন্দা উম্মে ফরহাদ আহমেদ সুরমা আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে বলেন, ‘আমার দুই ছেলেও ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে পড়ে। ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে আমার স্বামী ফোন করে আমাকে জানায়, মিতু ভাবি মারা গেছে। আমি লিফট থেকে নেমে দেখি মাহির। ও আমাকে বলে, আমার আম্মু মারা গেছে। সে তখন কান্না করছিল। তাকে ভবনের ভিতরে পাঠিয়ে আমি ওয়েল ফুডের সামনে যাই। দেখি মিতু ভাবি রাস্তায় পড়ে ছিলেন রক্তাক্ত অবস্থায়। গুলিল চিহ্ন দেখি। এরপর পুলিশ সুরতহাল করে। আমি স্বাক্ষর করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগের দিন রাতে আমাকে মিতু ভাবি ফোন করেছিলেন। উনার কাছে এসএমএস আসে ছেলেকে তাড়াতাড়ি স্কুলে নিয়ে যেতে। উনি জানতে চান, আমার কাছেও এসএমএস এসেছে কিনা। আমি বলেছি, না আসেনি। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আমরা একই বাসায় ছিলাম। সেখানে খাওয়া দাওয়া করি।’

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সাতজনকে আসামি করে আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। ১০ অক্টোবর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। চলতি বছরের ১৩ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ৯ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম সাক্ষী হিসেবে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের সাক্ষ্য দেন।

অভিযোগপত্রে প্রধান আসামি করা হয়েছে মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারকে। অভিযোগপত্রে আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু এবং শাহজাহান মিয়া।

আসামিদের মধ্যে শুধু মুসা পলাতক আছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে।

সারাবাংলা/আইসি/একে

এসপি বাবুল মিতু হত্যা মুসা

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর